দেশে প্রতিবছর ১২০০ গাড়ি তৈরির লক্ষ্য পিএইচপির
পিএইচপি অটোমোবাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ। সম্প্রতি দেশে গাড়ি উৎপাদন নিয়ে তাঁর স্বপ্ন ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন সাংবাদিক শিমুল নজরুলের সঙ্গে। বছরে ১২০০ গাড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে তাঁর পিএইচপি অটোমোবাইল লিমিটেড। ২০২২ সাল নাগাদ এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও গাড়ি উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করতে চান তরুণ এই উদ্যোক্তা।
আকতার পারভেজ বলেন, ‘অটোমোবাইল খাতের জন্য আমরা তিন-চার বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছি। এ ক্ষেত্রে আমাদের ভাগ্য ভালো একজন ভালো পার্টনার পেয়েছি। কয়েক বছর আগে মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট মাহাথির মোহাম্মদ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ইউআইটিএসের কনভোকেশনে এসেছিলেন। পরে তিনি নিজ দেশে ফিরে গিয়ে সুফি মিজানুর রহমান সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তারপর আমার বাবাকে মালয়েশিয়ায় আমন্ত্রণ জানান।’
আমরা যখন মাহাথির মোহাম্মদের আমন্ত্রণে মালয়েশিয়ায় যাই, তখন তিনি আমাদের বলেন, ‘তোমরা প্রথমে আমার অটোমোবাইল খাতটা দেখে আসো। তখন আমরা ভাবলাম আমাদের কেন অটোমোবাইলে ভিজিটে পাঠাচ্ছেন? কারখানা দেখে আসার পরে মাহাথির মোহাম্মদ আমার আব্বাকে প্রস্তাব দেন বাংলাদেশে অটোমোবাইল কারখানা গড়ে তুলতে।’
বাবা হেসে জানান, এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই নেই। আমার ব্যবসা গ্লাস, ঢেউটিন ও অন্যান্য পণ্যের। তখন মাহাথির মোহাম্মদ বললেন, ‘এ ব্যাপারে আমি আপনাকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করব।’ তখন থেকে অটোমোবাইল খাতে আমরা আগ্রহী হই।
এরপর দেশে এসে জমি নির্বাচন, কেনা, নকশা তৈরি করি। গাড়ি কারখানা তৈরি করার মতো কারিগরি সহযোগিতা আমরা মালয়েশিয়া থেকে পেয়েছি। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশীয় আর্কিটেক্টদের কিছু সহায়তা পেয়েছি। এর আগে বিভিন্ন সংস্থার যথাযথ অনুমোদন নেওয়া সবই ঠিকঠাকমতো সম্পন্ন করেছি।
আকতার পারভেজ আরো বলেন, ‘প্রথম দিকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। এখন খোদার রহমতে সব কিছু সুন্দরভাবে হয়েছে। সবার দোয়ায় আমরা গাড়ি তৈরি শুরু করেছি। শুরুতে কিছুদিন পর বুঝতে পারি গাড়ি তৈরির খরচ বেশি পড়ে যাচ্ছে, কারণ আমরা মালয়েশিয়া থেকে যন্ত্রপাতি এনে এসেম্বল করছি। প্রথম দিকে ডিউটি স্ট্রাকচার ম্যানুফ্যাকচারারদের অনুকূলে ছিল না। তারপর বিষয়টি সরকারকে জানালাম। সরকারও গুরুত্ব দিয়ে আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করেছে। ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার (১৩৩২ সিসি) গাড়ি এখন আমরা ১৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারছি।’
গ্রাহক সেবার বিষয়টি চিন্তা করে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি, যা দেশের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান দিতে পারেনি। ‘এটা হলো কোনো গ্রাহকের গাড়ি যদি কোনো দুর্ঘটনায় পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সে ক্ষেত্রে আমরা সেই গ্রাহককে তাঁর গাড়ি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত কম্পানির পক্ষ থেকে একটি বিকল্প গাড়ি ব্যবহারের জন্য দিয়ে থাকি। এ ছাড়া নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে মেইন্টেন্যান্সের জন্য পাঁচটি ফ্রি সার্ভিসিং দেওয়া হচ্ছে। আমাদের গাড়ি কেনার পর থেকে ৩৫ হাজার কিলোমিটার মাইলেজের মধ্যে সার্ভিসিংয়ের ক্ষেত্রে যত ধরনের উপাদান (ওয়াশ, লুব অয়েল, ফিল্টার, গিয়ার অয়েল) সব কিছুই ফ্রি দেওয়া হবে।’ (দৈনিক কালের কণ্ঠ)
আরও খবরঃ প্রজুক্তি ও সোলার কার উদ্ভাবন করলেন যবিপ্রবি শিক্ষক
Tag: Online newspaper free, Online free newspaper