চীনকে শায়েস্তা করতে মার্কিন সিনেটে বিল পাশ
চীনকে শায়েস্তা করতে যুক্তরাষ্ট্র সিনেটে ২৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের একটি বিল মঙ্গলবার পাশ হয়েছে। ৬৮-৩২ ভোটে বিলটি পাশ হওয়ায় চীনের সামরিক শক্তি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে উভয় দলের প্রচন্ড উস্মার ব্যাপারটির প্রকাশ ঘটেছে।
তথ্য-প্রযুক্তি সেক্টরে অধিক বিনিয়োগের মাধ্যমে চীনের সামরিক শক্তির উত্থানকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হবে। এছাড়া, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্থর গতি আনতে সক্ষম এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথাও ভাবছে মার্কিন প্রশাসন।
এর মধ্যদিয়েই বিশ্বে নিজেদের আধিপত্য অটুট রাখতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ‘ইউএস ইনোভেশন এ্যান্ড কমপিটিশন এ্যাক্ট’ নামক এই বিল যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য-প্রযুক্তি সেক্টরের নেতৃত্ব নিয়ে যে সন্দেহ-সংশয় দেখা দিয়েছে তা দূর করতে অপরিসীম অবদান রাখবে বলে মনে করছেন নীতি-নির্ধারকরা।
ডেমক্র্যাট এবং রিপাবলিকান-উভয় দলই চীনকে বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব নেতৃত্বকে চীন প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে এবং এজন্যেই তাকে অত্যন্ত কৌশলে সমুচিত শাস্তি দেয়া জরুরী বলে মন্তব্য করেছেন বাইডেন প্রশাসনের নীতি-নির্ধারকরা।
গবেষণা খাতে বেশী অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে কম্প্যুটারের গতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চীপস আবিস্কার করতে চায় মার্কিন প্রশাসন। আর এজন্যে খুব দ্রুত ৫০ বিলিয়ন ডলার প্রদান করা হবে আল্ট্রা স্মল চীপস উৎপাদনে সক্ষম কোম্পানীকে।
এসব চীপস সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এসব কোম্পানীর অধিকাংশই চীনের সাথে জড়িত। আর এটি এমন এক সময় যা পরবর্তী প্রজন্মের মহাকাশ অভিযানের পথ সুগম করবে।
উল্লেখ্য, গ্রহ বিজয়ের জন্যে ওয়াশিংটন এবং বেইজিং ক্রমাগতভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। এই বিলের মূল লক্ষ্য হচ্ছে চীনের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রত্যাশাকে সীমিত করার সাথে সাথে তার রাজনৈতিক প্রভাব খর্ব করা। মুসলমানদের সাথে লাগাতার বর্বরোচিত আচরণ তথা মানবাধিকার লংঘনের জঘন্য অপরাধে লিপ্ত থাকার দায়ে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে নতুন করে অবরোধ আরোপের সুযোগও রয়েছে এই বিলে।
করোনাভাইরাসের উৎসস্থল সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ইতিমধ্যেই বাইডেন প্রশাসন নতুন একটি গবেষণা টিম নিয়োগ করেছে। আসন্ন ২০২২ সালের শীতকালিন অলিম্পিক বর্জনের জন্যেও কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে হোয়াইট হাউজ থেকে। চায়নিজ কম্যুনিস্ট পার্টির রাজনৈতিক প্রভাব খর্ব করতে এই বিলে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।
৮ জুন সিনেটে বিলটি পাশের প্রাক্কালে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা সিনেটর চাক শ্যুমার (ডেমক্র্যাট-নিউইয়র্ক) বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরেই চীন আমাদের কাছে থেকে নানান সুযোগ নিচ্ছে বৈধ এবং অবৈধ উভয়ভাবেই। এক নম্বর কথা হচ্ছে চীন সবসময় আমাদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে। তারা গবেষণা ও বিজ্ঞান প্রকল্পে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ ঘটিয়েছে।
এ অবস্থায় আমরা যদি চীনকে প্রতিহত করতে কিছুই না করি তবে তারা বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে।’ এ বিলের পরিপূরক একটি বিল প্রতিনিধি পরিষদে পাশ হলেই তা প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের জন্যে হোয়াইট হাউজে যাবে।
উল্লেখ্য, চীনকে আক্রমণ করে তৈরী করা এ বিলের ব্যাপারে প্রতিনিধি পরিষদে অনেক ডেমক্র্যাটেরই আপত্তি রয়েছে।