Lead Newsবিবিধ

টিকা পাচ্ছেন না বৃদ্ধাশ্রমের প্রবীণরা

মহামারি করোনা ভাইরাসের টিকাদান শুরু থেকেই বয়স্কদের অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে সরকার। সম্প্রতি সারাদেশে শুরু হওয়া গণটিকাদান কর্মসূচিতেও ছিল অগ্রাধিকার। তবু টিকাবঞ্চিত দেশের বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে থাকা প্রবীণদের বড় একটি অংশ।

বলা হচ্ছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের জটিলতা ও প্রবীণদের টিকাকেন্দ্রে যেতে পারার অক্ষমতাই এজন্য দায়ী। বৃদ্ধাশ্রম সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টিকার জন্য সরকারের কাছে অনেকবার আবেদন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

প্রথম থেকেই জনস্বাস্থ্যবিদরা দ্রুততম সময়ে দেশের সব মানুষকে টিকার আওতায় আনার তাগিদ দিচ্ছেন। প্রবীণদের করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকায় তাদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করার কথাও বলেছেন তারা। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “প্রবীণদের মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে, তাদের প্রথমে টিকা দিতে হবে। আমরা যদি দ্রুত গ্রামাঞ্চলে প্রবীণদের টিকা দিতে পারি তবে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমবে।”

কল্যাণপুরে মিল্টন কেয়ার (পিভিটি) লিমিটেড নামে বৃদ্ধাশ্রমে রাস্তায় পড়ে থাকা প্রবীণদের তুলে এনে আশ্রয় দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে ১৪০ জন প্রবীণের আবাস হলেও সেখানে কেউই করোনা টিকা পাননি।

প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার কিশোর বালা গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের এখানের প্রবীণরা করোনার টিকা পাননি। টিকা দেওয়ার জন্য সবাইকে সেন্টারে নিতে হবে। কিন্তু আমাদের এখানে যারা আছেন তারা অনেকেই হাঁটতে-চলতে পারেন না। আমরা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেও টিকার ব্যবস্থা করতে পারিনি।”

তাঁর দাবি, বৃদ্ধাশ্রমটিতে এসে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। কারণ চলাফেরার ক্ষমতা নেই কিংবা রাস্তায় পড়ে থাকেন এমন ব্যক্তিরাই সেখানকার বাসিন্দা। তাই তাদের পক্ষে দূরে কোথাও গিয়ে টিকা নেওয়া দুরূহ ব্যাপার।

জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় অনেকেরই টিকার রেজিস্ট্রেশন করা যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। আমরা তো প্রবীণদের রাস্তা থেকে তুলে আনি, তাদের কোনো কাগজপত্র পাওয়া দুষ্কর। তারা পরিচয়পত্রের নম্বরও মনে করতে পারেন না। আবার যারা এখানে তাদের বাবা-মাকে দিয়ে যান তারা এনআইডি দিয়ে যান না। কিন্তু টিকা দেওয়ার নিয়ম অনুযায়ী তো এনআইডি কার্ড থাকতেই হবে। যে কারণে আমরা তাদের টিকার ব্যবস্থা করতে পারিনি।

উত্তরার বৃদ্ধাশ্রম আপন নিবাসের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দা শেলিনা শেলী জানান, “যারা আছেন তাদের ভোটার আইডি কার্ড নেই। তাদের টিকা কীভাবে দেব। এখানে ৮৭ জন প্রবীণ থাকেন। তাদের টিকা দেওয়া জরুরি।”

তিনি আরও বলেন, “বৃদ্ধাশ্রমের প্রবীণরা করোনাঝুঁকিতে আছেন। অনেকের আত্মীয়-স্বজন বাইরে থেকে আসেন। তাদের টিকা দিতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু না পেলে কী করার আছে।”

বৃদ্ধাশ্রমের প্রবীণদের দ্রুততম সময়ে টিকা দেওয়া প্রয়োজন জানিয়ে ড. মহশিন কবীর আরো বলেন, করোনায় প্রবীণরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। বাংলাদেশে করোনায় যারা মারা যাচ্ছে তার ৭০ শতাংশই প্রবীণ। সেক্ষেত্রে বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে টিকার ব্যবস্থা করা সময়ের দাবি।

অন্যদিকে টিকা নিতে সরকারের বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করা হলেও আশানুরূপ সাড়া মেলেনি বলে দাবি করেছেন গাজীপুরের ওল্ড রিহ্যাব্যালিটেশন সেন্টারের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + twenty =

Back to top button