অপরাধ ও দূর্ঘটনা

ছাত্রলীগ নেতার দুশোর বেশি অস্ত্র বিক্রির রেকর্ড!

যশোরের শার্শা উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা আকুল হোসেন ভারত থেকে আনা অস্ত্র বিক্রির একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিলেন। রাজধানী ঢাকা, সীমান্তবর্তী যশোর, সাতক্ষীরা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সক্রিয় রয়েছেন এই চক্রের অর্ধশতাধিক সদস্য।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছে। পুলিশ বলছে, গত ছয় বছরে ২০০টির বেশি অস্ত্র বিক্রি করেছেন আকুল ও তাঁর সহযোগীরা। তাঁরা প্রতিটি অস্ত্র ২৮ থেকে ৫০ হাজার টাকায় কিনতেন। বিক্রি করতেন ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকায়। ভারতের তিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অস্ত্র কিনতেন তাঁরা।

গেলো বুধবার রাতে রাজধানীর দারুস সালাম থেকে অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রের সদস্য আকুল ও তাঁর চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আকুল হোসেন, ইলিয়াস হোসেন, আবুল আজিম, ফারুক হোসেন ও ফজলুর রহমান। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে ৮টি বিদেশি পিস্তল, ৮টি গুলি, ১৬টি ম্যাগাজিন ও ১টি প্রাইভেট কার উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে ডিবি।

রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেপ্তার আকুল এ চক্রের প্রধান। ২০১৪ সাল থেকে তিনি অস্ত্র ব্যবসা ও স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। তাঁর বিরুদ্ধে যশোরের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র মামলাসহ আটটি মামলা রয়েছে।

কে এই আকুল হোসেন

দুই ভাগে বিভক্ত যশোর-১ (শার্শা) আসনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। একাংশের নেতৃত্বে সাংসদ শেখ আফিল উদ্দীন ও অপর অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম।

বিভক্তির কারণে শার্শা উপজেলা ও বেনাপোল পৌর ছাত্রলীগের দুটি করে কমিটি রয়েছে। সাংসদ ও মেয়র নিজেদের পছন্দমতো দুটি কমিটি দিয়েছেন। দুই অংশের কমিটির সভাপতি একজন হলেও সাধারণ সম্পাদক দুই কমিটিতে দুজন। একজন মেয়রের অনুসারী আর অপরজন সাংসদের। আকুল হোসেন মেয়রের দেওয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

জানতে চাইলে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দীন পিয়াস বলেন, ‘শার্শা উপজেলায় ছাত্রলীগের দুটি কমিটির অনুমোদন দেওয়া আছে। একটি কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকুল হোসেন।’

পুলিশ সূত্র বলছে, আকুল হোসেন বেনাপোল পৌরসভাসংলগ্ন বাহাদুর এলাকার বাসিন্দা। ২০১৯ সালের ১৫ জুন তাঁর বাড়ি থেকে পুলিশ তিনটি গুলি, ১২টি ম্যাগাজিন, একটি বোমা, ছয়টি হাঁসুয়া, একটি চাপাতিসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করে। এ ঘটনায় বেনাপোল থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হলেও অজ্ঞাত কারণে মামলার অভিযোগপত্র থেকে আকুলের নাম বাদ দেয় পুলিশ।

বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন খান বলেন, ‘আকুলের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। তবে মামলার অভিযোগপত্রে আকুলের নাম আসেনি। আমি এই থানায় আসার আগের ঘটনা এটি।’ তিনি বলেন, আকুলের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজি, সোনা ছিনতাই, মারামারি, কাস্টমস কর্মকর্তাদের ওপর হামলাসহ আটটি মামলা রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 + 3 =

Back to top button