ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশের কেনা টিকা অক্টোবরের মধ্যে পেতে চায় বাংলাদেশ। বিষয়টি বাংলাদেশে দেশটির হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীকে জানিয়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সোমবার কেন্দ্রীয় ঔষধাগার মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের মন্ত্রী এ কথা জানান।
অনুষ্ঠানে উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য ৬০টি অ্যাম্বুলেন্স বিতরণ করা হয়। এগুলোর মধ্যে ভারতের দেয়া উপহার রয়েছে ৪১টি। বাকিগুলো হাসপাতাল সার্ভিসেস বিভাগ কিনেছে।
এই অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীও। তিনি নানা বিষয়ে কথা বললেও টিকা নিয়ে কিছু বলেননি। ভারতীয় দূত বলেন, ’করোনার শুরু থেকেই আমরা বাংলাদেশের পাশে ছিলাম। করোনার রোগীদের শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে আইসিইউ প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন হয়। এ জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি আজ বিতরণ হচ্ছে। আমি আশা করি, এগুলো করোনা মোকাবিলায় কিছুটা হলেও কাজে আসবে।’
সোমবার ভারতের উপহারের অ্যাম্বুলেন্স বিতরণ করা হয়
দোরাইস্বামী আরও বলেন, ‘করোনা আমাদের দেখিয়েছে কেউ একা ভালো থাকতে পারে না। করোনা মোকাবিলায় ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করছে।’
বাংলাদেশে করোনা মোকাবিলায় ভারত থেকে অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সরঞ্জাম পাঠানো অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের প্রশংসা করেন বিক্রম দোরাইস্বামী।
দোরাইস্বামীর সঙ্গে টিকা নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ’হাইকমিশনার বলছেন আমাদের সহযোগিতা করবেন। আজকেও কথা হয়েছে। ওনাকে আমরা জানিয়েছি, ফরেন মিনিস্ট্রির মাধ্যমে আমাদের সহযোগিতা করেন, যেন অক্টোবরের মধ্যেই আমরা টিকা পাই। আশা করি আমরা পাব।’
বাংলাদেশে গণটিকা কর্মসূচি শুরু করতে প্রথমে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের ওপর নির্ভর করেছিল সরকার। কোম্পানিটি থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা কিনতে চুক্তিও হয়। এ জন্য অর্থ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০০ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু টিকা এসেছে ৭০ লাখ।
ভারতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেলে সে দেশের সরকারের নিষেধাজ্ঞায় আর টিকা পাঠাতে পারেনি সিরাম। ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণে ভারতেই বেড়ে যায় টিকার চাহিদা। এ কারণে টিকা বিতরণে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক জোট কোভ্যাক্সকেও টিকা দিতে পারেনি সিরাম।
সিরাম থেকে প্রতিশ্রুত টিকা না পেয়ে বাংলাদেশ পরে চীন থেকে টিকা কিনে এনেছে। রাশিয়ার সঙ্গেও চুক্তির চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি কোভ্যাক্স থেকে সিরামের বদলে ফাইজার, মডার্নার টিকা আসছে।
সিরামের টিকা প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা কেটে যাচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কাঁচামালের অপর্যাপ্ততার কারণে সিরাম উৎপাদন জোরদার করতে পারেনি, সে কারণেই চুক্তি অনুযায়ী ভারত টিকা দিতে পারেনি। এখন তাদের সংকট অনেকটাই কেটে গেছে, সে কারণে চুক্তির টিকা আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
‘তারা অক্টোবর মাসেই চুক্তির টিকা আসতে পারে বলে ধারণা দিয়েছে। টিকা পেতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যোগাযোগ রাখছে। আশা করি অক্টোবর মাসেই টিকা আসবে।’