Lead Newsআইন ও বিচার

ইভ্যালির এমডি-সিইওকে র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদ, আগামীকাল থানায় হস্তান্তর

অনলাইনে পণ্য সরবরাহকারী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং তার স্বামী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলকে গ্রেফতারের পর র‌্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

আগামীকাল শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির এ দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে এ দম্পতিকে গ্রেফতার করে র‌্যাবের সাদা গাড়িতে করে র‌্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে বিকেল ৪টা থেকে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের মোহাম্মাদপুরের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব।

রাতে র‌্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে বলেন, ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও এমডির বিরুদ্ধে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিকেল ৪টা থেকে রাসেলের মোহাম্মাদপুরের বাসায় গ্রেফতার অভিযান চালানো হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের গ্রেফতার করে র‌্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয়। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামীকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।

এর আগে বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক ইভ্যালির এমডি রাসেল এবং তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেন।

ওই মামলায় লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে অভিযোগকারী আরিফ বাকের ও তার বন্ধুরা চলতি বছরের মে ও জুন মাসে কিছু পণ্য অর্ডার করেন। পণ্যের অর্ডার বাবদ বিকাশ, নগদ ও সিটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে পুরোপুরি অর্থ পরিশোধ করা হয়। পণ্যগুলো ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে ডেলিভারি ও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সরবরাহে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠান সমপরিমাণ টাকা ফেরত দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে পণ্যগুলো ডেলিভারি না পাওয়ায় বহুবার ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধিকে ফোন করা হয়। সবশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর যোগাযোগের মাধ্যমে অর্ডার করা পণ্যগুলো পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তারা।

এতে আরও বলা হয়, একপর্যায়ে ইভ্যালি পণ্য প্রদান ও টাকা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসে যান। এসময় এমডি রাসেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। একপর্যায়ে অফিসের ভেতরে অবস্থান করা রাসেল উত্তেজিত হয়ে তার রুম থেকে বেরিয়ে এসে তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন এবং পণ্য অথবা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। ভয়-ভীতি ও হুমকিসহ তাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করা হয়। এতে তারা চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দিনযাপন করছেন এবং পণ্য বুঝে না পাওয়ায় আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

মামলার এজাহারে রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে তিনটি ধারায় অপরাধের কথা বলা হয়েছে। ফৌজদারি দণ্ডবিধির ধারাগুলো হচ্ছে- ৪২০, ৫০৬ ও ৪০৬।

অনলাইনে পণ্য কেনাবেচার জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে ওঠা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই নানা অনিয়মের অভিযোগ ছিল। গত ২৫ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও এমডির সব ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এরপর গত ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে এক সভায় ইভ্যালির বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত কমিটি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ইভ্যালির প্রধান দুই কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করলো র‌্যাব।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে ইভ্যালি এমডির বাসার সামনে তার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ গ্রাহকরা। তারা প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসার সুযোগ অব্যাহত রাখতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 3 =

Back to top button