আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ সরকার চাইলে সহযোগিতা করতে চায় জাতিসংঘ। ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি জাতিসংঘের এই সহায়তার কথা তুলে ধরেন।
মিয়া সেপ্পো বলেন, “জাতিসংঘ কোনো দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে না। তবে কোনো দেশের সরকার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সহায়তা চাইলে জাতিসংঘ তা দিয়ে থাকে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা সেই সহযোগিতা দেব। তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার বন্ধে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের নতুন প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও নারীর প্রতি সংহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ রয়েছে।”
সাংবাদিকদেরে এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি বলেন, “মিয়ানমার ও আফগানিস্তান একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলছে। জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে দেশ দু’টির প্রতিনিধিত্ব কে করবে, সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।”
বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রসঙ্গে মিয়া সেপ্পো বলেন, “রোহিঙ্গা সংঘটিত অনেক মূল্যায়ন, চলমান আফগানিস্তান ইসুটুতে আরও বেশি করে দেওয়া হচ্ছে। যে কোনো বিষয়ে মনোযোগ রাখা কষ্টকর। দীর্ঘমেয়াদী যে কোন সময় অনেক চ্যালেঞ্জ বৃদ্ধি পায়। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন শুরু হচ্ছে; সবই সঠিকভাবে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না।”
মিয়া সেপ্পো বলেন, “রোহিঙ্গা সংকট একটি জটিল প্রক্রিয়া। এটি কেবল মানবিক সংকট নয়, রাজনৈতিকও। এ সংকট সমাধানে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা রাজনৈতিক মতৈক্যে আসতে পারছেন না, যার কারণে এর রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে না। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ায়, অনেকের মূল্যায়ন, চলমান আফগানিস্তান ইস্যুতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
রোহিঙ্গা ইস্যুটি যেন কেউ ভুলে না যায় সেদিকে নজর রাখার আহ্বান জানিয়ে মিয়া সেপ্পো বলেন, “শুধু বাংলাদেশ নয়, রোহিঙ্গা ইস্যু যেন কেউ ভুলে না যায় সেদিকে সবাইকে নজর রাখতে হবে। রোহিঙ্গা সংকট উত্তরণে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। বাংলাদেশ তাদের পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ, দাতাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলব, এখানে যেন ফোকাস রাখে।”
বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া প্রসঙ্গে মিয়া সেপ্পো বলেন, “বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সরকারকে আমরা স্বাগত জানাই। এর মধ্যে দিয়ে প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারবে।”
ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিকাব) সভাপতি পান্থ রহমান ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনউদ্দীন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।