Lead Newsরাজনীতি

প্রশাসনকে দলীয়করণসহ সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে সরকার : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “সরকার পুরো প্রশাসনকে দলীয়করণ করে ফেলেছে। তারা একে একে রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।”

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগিডিয়ার হান্নান শাহের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “কয়েক দিন আগে পত্রিকায় দেখলাম ১৭ জন সাময়িক বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এটাও দলীয়ভাবে করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে আছেন যাদের ন্যূনতম যোগ্যতা নেই। আজকে প্রশাসনে দলীয়ভিত্তিতে লোক নেয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতেও লোক নেয়া হচ্ছে দলীয় ভিত্তিতে। যেখানে চাকরির জন্য যাবেন সেখানেই দলীয় ভিত্তিতে নেয়া হয়। এইভাবে আজকে পুরো প্রশাসনকে সরকার দলীয়করণ করে ফেলেছে। রাষ্ট্রকে দলীয়করণ করে ফেলেছে। যারা আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসে আছে, তারা একে একে রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “এই সময়টা বাংলাদেশের সবচাইতে দুঃসময়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর হয়েছে। এত খারাপ সময় আমরা আগে কখনো দেখিনি। আমরা স্বৈরাচার দেখেছি, আমরা একনায়কতন্ত্র দেখেছি। কিন্তু এই যে ভয়াবহভাবে ফ্যাসিবাদ গোটা জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং জাতির সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এটা আমরা অতীতে কখনো দেখিনি।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজকে মানুষ কথা বলতে পারে না, কেউ কথা বলার সাহস পায় না। আমি কালকে একটি রেস্টুরেন্টে চা খেতে গিয়েছিলাম। আমি যাওয়ার পর সেখানে সবাই ছুটে আসলো। আমরা যাদেরকে বয়-বেয়াড়া বলি। তারা এসে বলছে, স্যার আমরা কেউ গাজীপুরে থাকি, কেউ ভোলায় থাকি, কেউ রাজশাহীতে থাকি। আমরা কেউ এলাকায় থাকতে পারছি না। আমরা মিথ্যা মামলা এবং ওদের (আওয়ামী লীগ) অত্যাচারে পালিয়ে চলে এসেছি। এই রকম অবস্থা বাংলাদেশে এখন শুরু হয়েছে। এ রকম ঘটনা একটা দুটো নয়। প্রায় সব জায়গায় দেখবেন আমাদের ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ছেলেরা এমনকি বিএনপির বয়স্ক লোকেরা এলাকায় থাকতে পারছে না।”

অর্থনৈতিক দিকে সরকার চরম দুর্নীতি করছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে দুর্নীতি নাই। দেশ একটি লুটপাটের রাজত্বে পরিণত হয়েছে। যেখানে যাবেন সেখানেই দুর্নীতি-লুটপাট। মেঘা প্রজেক্টে আরো বেশি মেঘা লুটপাট।”

তিনি বলেন, “৭২-৭৫ সালে আওয়ামী লীগের একই অবস্থা ছিল। তখনও তারা লুটপাট করতো। তখন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের নামটা এখন বদলে এর নাম রাখা উচিৎ ‘নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি’। আজকে তারা ঠিক লুটপাট সমিতিতে রূপান্তরিত হয়েছে। করোনায় সম্পূর্ণভাবে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তারা টিকা সংগ্রহের কথা বলে টিকা সংগ্রহ করতে পারেনি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের সকল অর্জন তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমাদের অন্ধকার সময়ের পথপ্রদর্শক বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। তিনি একজন সৈনিক ছিলেন। সৈনিকের চরিত্র যুদ্ধ করা। তিনি ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমৃত্যু যুদ্ধ করেছেন। ১/১১-এ বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের যে পরিকল্পনা তা রুখে দিতে তিনি সংগ্রাম করেছেন। যার জন্য তিনি জেলেও গিয়েছেন। আজকে দেশের এই অবস্থায় তাকে আমাদের খুব প্রয়োজন ছিল।”

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম প্রমুখ।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight + eleven =

Back to top button