আন্তর্জাতিক

আফগানিস্তান থেকে আইএস নির্মূল করছে তালেবান

আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিতের ঘোষণা দিয়েছিল তালেবান। তবে গত ৬ সপ্তাহে সেখানে একাধিক হামলা চালিয়েছে জিহাদি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের অনুসারী দল আইএস-কে।

গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান চলে যায় তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী আফগানিস্তান ছাড়ছিল বিদেশি সেনারাও। এরমধ্য দিয়ে মূলত যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করে বিদেশি শক্তিগুলো। এতে আফগানিস্তান তালেবানের হাতে পড়লেও, গত ৪০ বছর ধরে সেখানে যে সংঘাত চলছে তা থেমে যায়। কিন্তু এখন প্রায়ই সেখানে আইএস-কে জিহাদিরা হামলা চালাচ্ছে। রাজধানী কাবুলসহ জালালাবাদ ও মাজার-ই-শরিফ এলাকায় তাদের একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে।

তালেবান ক্ষমতা দখলের ১১ দিনের মাথায় ২৬ আগস্ট কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে ভয়াবহ জিহাদি হামলা চালায় আইএস-কে। শক্তিশালী বিস্ফোরণে কেপে ওঠে গোটা কাবুল শহর। চলে গুলিও। এতে ১৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। ওই হামলার জন্য যুক্তরাষ্টের ব্যর্থতাকেই দায়ি করেছে তালেবান। তাদের দাবি, আইএস-কে যেই হামলা চালিয়েছে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল মার্কিন সেনারা।

এরপরে নানগরহর প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদেও হয়েছে সিরিজ হামলা। এতে তালেবান সদস্যরাসহ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। আইএস-কে দাবি করেছে, তারা জালালাবাদে তালেবানের ৩৫ সদস্যকে হত্যা করেছে। তবে তালেবান এমন দাবি অস্বীকার করেছে। নিরপেক্ষ সূত্র থেকে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত হওয়ার উপায়ও নেই। হতাহতের সংখ্যা অস্বীকার করলেও কঠিন ভাষায় হামলাকারীদের হুমকি দিয়েছে তালেবান। যে কোনো মূল্যে ইসলামিক স্টেটের আদর্শ আফগানিস্তান থেকে মুছে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে তারা। তালেবানের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মন্ত্রী জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, এই বিশৃঙ্খলাকারীদের নিয়মিত ভাবে ধরা হচ্ছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তালেবান কি আইএস-কে জঙ্গিদের নির্মূল করতে পারবে? এর আগে যখন মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানে ছিল তখন দেশটির অনেক জেলার নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতেই ছিল। আবার কিছু জেলা ছিল আইএস জঙ্গিদের দখলে। তালেবান বিভিন্ন সময় হামলা করে সেসব জেলা থেকে আইএস সদস্যদের তাড়িয়ে দিয়েছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে ইসলামিক স্টেটের আদর্শ মুছে ফেলা তালেবানের জন্য এতো সহজ হবে না।

আইএস-কে’র সবথেকে বড় ঘাটি হচ্ছে নানগরহর প্রদেশ। সেখানে অভিযান চালাচ্ছে তালেবান সদস্যরা। এতে ৮০ জনেরও বেশি আইএস-কে সদস্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তালেবান। একইসঙ্গে আইএস-কে নেতা জিয়া উল-হককে হত্যার দাবিও করছে তারা। পাকিস্তান থেকে যেসব আইএস জিহাদি আফগানিস্তানে ঢুকছে তাদেরকে খুঁজে খুঁজে মারছে তালেবান। ফারুক বেঙ্গালজাই নামের এক পাকিস্তানি আইএস নেতাকে সম্প্রতি হত্যা করে তালেবান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + fifteen =

Back to top button