Lead Newsআন্তর্জাতিক

মসজিদুল আকসায় ইহুদিদের ‘নীরব প্রার্থনার’ অনুমতিঃ ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভ প্রকাশ

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের পশ্চিম তীরের জেরুজালেমের মসজিদুল আকসা কমপ্লেক্সে ইহুদিদের ‘নীরব প্রার্থনার’ অনুমতি দিয়েছে এক ইসরাইলি আদালত।

গত বুধবার জেরুজালেমের ইসরাইলি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এক আদেশে এই অনুমতি দেয়।

ইসরাইলি আদালতের এই আদেশের জেরে ক্ষোভ প্রকাশ করছে ফিলিস্তিনিরা। ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী রাব্বি আরইয়ে লিপ্পোর আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই অনুমতি দেয়া হয়। এর আগে তাকে মসজিদুল আকসার আঙ্গিনায় প্রার্থনার জন্য মসজিদে প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিলো।

আদালতের আদেশে বলা হয়, কোনো ইহুদি উপাসনাকারী যদি মসজিদুল আকসার ভেতরে ‘নিরবে প্রার্থনা’ করে, তবে তাতে কোনো অপরাধ হবে না।

এর আগে ইসরাইলি আইন অনুসারে ইহুদিরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারলেও প্রার্থনা করতে পারতো না। ইহুদিদের প্রার্থনার জন্য মসজিদের বাইরে পশ্চিম দেয়ালের সামনে নির্ধারিত রয়েছে।

ইসরাইলি আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ইবরাহীম ইশতাইয়া মসজিদের মর্যাদাগত অবস্থান বহাল রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পালনের জন্য দেশটির প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি আরব দেশগুলোকেও ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি জানিয়ে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা মসজিদুল আকসায় ইসরাইলের নতুন পরিস্থিতি চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্কতা জানাচ্ছি।’

অপরদিকে মসজিদুল আকসার তদারক করা জেরুসালেম ইসলামিক ওয়াকফের পরিচালনাকারী জর্দানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এর মাধ্যমে মসজিদুল আকসার ঐতিহাসিক ও আইনি মর্যাদার মারাত্মক লঙ্ঘন করা হচ্ছে।’

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মসজিদুল আকসার ওপর ইসরাইল নগ্ন আগ্রাসন চালিয়েছে এবং এর মাধ্যমে যুদ্ধের স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে।

জেরুসালেমের মুফতি শেখ মুহাম্মদ হুসাইন এক বিবৃতিতে ইসরাইলের পদক্ষেপের ফলে সম্ভাব্য সহিংসতার শঙ্কা করেন।

তিনি বলেন, ‘মসজিদুল আকসাকে দখলে নেয়ার আগ্রাসী সিদ্ধান্ত থেকে আরব ও মুসলিমদের কাছে আমরা জেরুসালেম ও মসজিদুল আকসাকে রক্ষার আবেদন করছি। সাথে সাথে আমরা কোনো প্রকার ধর্মীয় যুদ্ধ শুরু হওয়ার বিরুদ্ধে সতর্কতা জানাচ্ছি।’

জেরুসালেমের মসজিদুল আকসা ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। মক্কার মসজিদুল হারাম ও মদীনার মসজিদে নববীর পরই এই মসজিদকে মুসলমানরা মর্যাদা দেন।

অপরদিকে ‘টেম্পল মাউন্ট’ হিসেবে পরিচিত এই স্থাপনাটি ইহুদিদের কাছেও পবিত্র স্থান। এই স্থানে ইহুদিরা তাদের প্রধান ধর্মীয় উপসনালয় থাকার দাবি করেন।

১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর জেরুসালেম শহরের পশ্চিম অংশ দখল করে নেয় ইসরাইলি বাহিনী। পরে ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর মসজিদুল আকসাসহ পূর্ব জেরুসালেম ইসরাইল দখল করে নেয়। আন্তর্জাতিক আইনে অধিকৃত ভূমি হিসেবে বিবেচিত হলেও ইসরাইল শহরটিকে একীভূত করে নেয় এবং অখণ্ড জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে। বিভিন্ন সময় শহরটিতে থাকা ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে ইসরাইলি ইহুদিদের শহরে আবাসনের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।

সূত্র : আল জাজিরা

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − twelve =

Back to top button