Lead Newsঅপরাধ ও দূর্ঘটনা

কুমিল্লার পর চাঁদপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ,  ৩ জনের প্রাণহানি

কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ পাওয়া এবং সেটিকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বেশ কয়েকটি মন্দিরে ভাংচুর ও পুলিশের সাথে বিক্ষুব্ধদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার রাতের সেই সংঘর্ষে তিন জন নিহত হয়েছে এবং দুই জন গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ জানান, বুধবার সন্ধ্যার পর এ ঘটনা ঘটে।

হাজীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মোমেনা আক্তার জানিয়েছেন, “নিহত তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তবে তারা পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন কিনা সেটি তিনি নিশ্চিত করেননি।” ঘটনার পর বুধবার রাত থেকে হাজীগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

এই বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান এর আগে বিবিসিকে বলেছিলেন, “পূজামণ্ডপে কোরআন রাখার তথ্য তারা পেয়েছিলেন জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ এর মাধ্যমে এবং এ ঘটনার জের ধরে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র‍্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে শহরে।”

এদিকে এ ঘটনায় শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে এর আগে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। আর পুলিশ বলছে, তারা সন্দেহভাজন অন্তত দশ জনকে আটক করেছে।

কি ঘটেছিলো কুমিল্লার পূজামণ্ডপে?

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন মঙ্গলবার খুব ভোরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর আসে যে নানুয়ারদীঘির পূজামণ্ডপের ভেতরে প্রতিমার পায়ের কাছে একটি কোরআন রাখা আছে।

খবর পেয়েই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ সেখান থেকে কোরআন নিয়ে আসেন।

কিন্তু দশটা নাগাদ একটি ছবি ব্যাপক ভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়াতে থাকে যেখানে দেখা যায় প্রতিমার হাঁটুর কাছে কোরআন। অনেকে এটি দিয়ে নানা ধরণের লাইভ বক্তব্য দিয়ে কোরআন অবমাননার অভিযোগ করতে থাকেন।

“কিন্তু খবরটি খুব দ্রুত ছড়ানো হয় এবং কয়েকটি মাদ্রাসার লোকজন ছাড়াও স্থানীয় অনেকে প্রতিবাদ করতে শুরু করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়”।

এদিকে ঘটনার পরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোরআন অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে ব্যাপক প্রচার শুরু হয় এবং অনেকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনেকে ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করেন।

পূজা উদযাপন পরিষদ যা বলছে

পূজা উদযাপন পরিষদের কুমিল্লা জেলা ইউনিটের সম্পাদক নির্মল পাল বলছেন খুব ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে।

“পূজা বানচালের জন্য পরিকল্পিতভাবে কোরআন রেখে এ ঘটনা ঘটিয়ে তারাই এখন শহরজুড়ে পূজাবিরোধী বিক্ষোভ করছে। কয়েকটি মণ্ডপে হামলার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু পুলিশের বাধায় ভেতরে ঢুকতে না পারলেও গেইট বা সামনের স্থাপনা ভাংচুর করেছে,” বলছিলেন তিনি।

হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা জানিয়েছেন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে কুমিল্লায় অনেকগুলো পূজামণ্ডপে উৎসব চলছিলো। কিন্তু আজ যেই মণ্ডপে কোরআন পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে সেখান থেকে প্রতিমা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ব্যবস্থাপকেরা জানিয়েছেন পূজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বিসর্জন দিয়ে দিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × one =

Back to top button