সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দমনের দাবি
পণ্যমূল্যের লাগামছাড়া দামে শহুরে দারিদ্র্য মানুষের নাভিশ্বাস উঠার অবস্থা এখন। আর এরজন্য দায়ী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। তাই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কঠোর হস্তে দমনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানামো হয়েছে।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানায়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বর্তমান বাজারে মোটা চালের কেজি পৌঁছেছে ৫০ টাকায়। চালের দামের ওপর নির্ভর করছে অন্যান্য জিনিসপত্রের দামের সমীকরণ। পরিণামে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কৃষক, শ্রমিক এবং পেশাজীবীসহ সীমিত আয়ের মানুষ। অথচ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনও ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না। চোখে পড়ছে না সারাদেশে কালোবাজারি ঠেকানোর কার্যক্রম। অধিকন্তু বছরের এই সময়ে বাংলাদেশে চালের দাম বৃদ্ধি নজিরবিহীন এবং উৎকণ্ঠার। খাদ্যের অভাবে এই পৃথিবীতে কখনও পণ্যের দাম বাড়াতে হয়নি, সংকট লাগেনি। সংকট লেগেছে মঞ্জুতদারদের মজুতদারিতে, আড়তদারিতে।
তারা আরও বলেন, ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে মহামারি পরবর্তী আমরা দেখেছি, পৃথিবীজুড়ে একদিকে মানুষ না খেয়ে কঙ্কাল হয়ে মরলো, আরেক দিকে মঞ্জুতদার কোম্পানি গুলো তাদের পণ্য সমুদ্রে নিক্ষেপ করলো। ৪৩ এবং ৭৪-এর সংকটময় ইতিহাস আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। এমনকি মজুতদারির কালো প্রভাবের শিকার হয়েছি করোনার আগেই। লোনা পানির দেশে কৃত্রিম সংকট এবং গুজব ছড়িয়ে লবনকাণ্ড ঘটিয়ে মধ্যস্বত্বভোগীদের অতিরিক্ত মুনাফা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে কিছু সংখ্যক অসাধু ব্যবসায়ী।
পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করে কীভাবে বিপর্যয় নেমে এলো সেটা মজুতদারির জলজ্যান্ত প্রমাণ। বর্তমানে একদিকে করোনা মহামারি, চার দিকে কর্মসংস্থানের অভাবে বেকারত্ব বৃদ্ধি, একদিকে ডেঙ্গু জ্বরের ছোবল, আরেকদিকে পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। এর একমাত্র কারণ আয় কমে সবকিছুর দাম বাড়ায় অর্থ কুক্ষিগত হয়েছে পুঁজিপতির ঘরে। অসাধু ব্যবসায়ীরাও অতিরিক্ত মুনাফার লোভ সামলাতে পারছেন না। বিপরীতে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া লোকজন।
সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ‘জাতীয় জনতার ঐক্য’ নেতারা বলেন, আয় ও ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করতে না পারলে শ্রীলঙ্কার মতো অশুভ দিনের মুখোমুখি হতে পারে। চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার ভারসাম্য সাধারণ মানুষের অধিকার। টিসিবি পণ্যের সহজলভ্যতা এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ করে বাংলাদেশে দুর্নীতি, কালোবাজারি ও মজুতদারি শক্ত হাতে দমন এখন সময়ের প্রয়োজন। পৃথিবীর নাজুক পরিস্থিতিতে কৃষকদের বাঁচিয়ে কৃষিতে মনোযোগী হলে একদিকে যেমন খাদ্যে জোগান আসবে, ঠিক অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকটজনক সামঞ্জস্যহীনতা মোকাবিলা সম্ভব হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় জনতার জোটের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসাইন, কো-চেয়ারম্যান এ্যাড. গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ জনতা ঐক্য পার্টির চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান, ন্যাশনাল সবুজ বাংলা পর্টির চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম প্রমুখ।