স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

ডায়াবেটিসের পাঁচটি লক্ষণ

বেশির ভাগ মানুষই মাঝ রাতে ঘুম থেকে উঠে হয় এক গ্লাস পানি খান কিংবা বাথরুমের কাজ সারেন। তার পর আবার ফিরে দিব্যি ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু ডায়েবিটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে এই কাজটা করা একটু কঠিন হয়ে যায়। তাদের বেশির ভাগ সময়ে রোজ রাতে ঠিক একই সময় ঘুম ভেঙে যায়। কোনো ভুতুড়ে ব্যাপার নয়। বা কোনো শব্দ শুনেও নয়। এমনটা হওয়ার দু’রকম কারণ থাকতে পারে। এক, ‘ডন ফেনোমেনা’ বা দুই, ‘সিমোজি এফেক্ট’। জেনে নিন সেগুলো কী।

গ্লুকোজ থেকে এনার্জি তৈরি করে শরীর। সকালে ঘুম থেকে উঠতেও খানিক এনার্জির প্রয়োজন। তাই সেই এনার্জি তৈরির কাজ শুরু হয় ভোর থেকে। পাশপাশি, কর্টিসোল, ক্যাটেকোলামাইন এবং অন্য হরমোনের ক্ষরণ রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে শুরু হয়ে যায়। যাতে পরের দিনের জন্য শরীর তৈরি হতে পারে। তার ফলে লিভার আরো কিছু গ্লুকোজ তৈরি করে যা রক্তে মিশে যায়। এই সব যখন হচ্ছে, ততক্ষণে আগের দিনের ডায়েবিটিসের ওষুধের প্রভাব কমে আসা শুরু করেছে। তাই এই সময়টা হঠাৎ রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটা বেড়ে যায়। তাই ঘুম ভেঙে যেতেই পারে।

সিমোজি এফেক্টের আর এক নাম রিবাউন্ড হাইপারগ্লাইসেমিয়া। ঘুমের মধ্যে অনেক সময়ে রক্তে শর্করা মাত্রা অনেকটা কমে যায়। সেই মাত্রা ঠিক করতে শরীরে এমন কিছু হরমোনের ক্ষরণ হয়, যা লিভারকে বাধ্য করে রক্তে আরো কিছুটা গ্লুকোজ ছাড়তে। কিন্তু ডায়েবিটিস রোগীদের ক্ষেত্রে লিভার একটু বেশি মাত্রায় গ্লুকোজ রক্তে ছেড়ে দেয়, যার জন্য ভোরের দিকে রক্তে শর্করা মাত্রা বেড়ে যায় আর ঘুম ভেঙে যায়। এমন কোনো উপসর্গের সম্মুখীন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এছাড়াও আরো কয়েকটি উপসর্গের দিতে খেয়াল রাখতে হবে। হঠাৎ কি কানে কম শুনতে শুরু করেছেন? অনেকেই ভাবেন বয়স বাড়ার সাথে এমনটা হয়ে থাকে। কিন্তু কানে কম শোনা ডায়েবেটিসেরও লক্ষণ হতে পারে। যদি দেখেন টিভি দেখার সময় ভলিউম ক্রমশ বাড়িয়ে যেতেই হচ্ছে, না হলে শুনতে পাচ্ছেন না তা হলে সাবধান থাকুন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রি-ডায়াবেটিকের কারণে শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে। অর্থাৎ, রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি, কিন্তু ঠিক যতটা হলে ডায়াবেটিক বলা হবে তার থেকে কম হলে সেই অবস্থাকে প্রি-ডায়াবেটিক বলা হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে তা কানের রক্তনালী ও স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে। যার ফলে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে শ্রবণশক্তি।

বয়সের কারণে ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়া স্বাভাবিক। কিন্তু যদি কালো বা বেগুনি ছোপ দেখা যায় ত্বকে, বা কনুই, গোড়ালির মতো জায়গা কালো হয়ে যেতে থাকে তা হলে অবশ্যই আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বেশ বেশি।

ডায়াবেটিসের প্রভাবে শরীরে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। যার ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। যার ফলে সারাক্ষণ চুলকানির সমস্যা হতে পারে। যদি ময়শ্চারাইজার ও ক্রিম লাগানোর পরও ত্বক শুষ্ক লাগে তা হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে ডায়েবেটিস পরীক্ষা করিয়ে নিন।

শ্রবণশক্তি কমে যাওয়ার মতোই ডায়েবেটিসের কারণ দৃষ্টিও ঝাপসা হয়ে যেতে পারে। ডায়েবেটিসে আক্রান্ত হলে শরীরে ফ্লুইডের মাত্রার পরিবর্তন হয়। যার ফলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।

সূত্র : নিউজ ১৮

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 1 =

Back to top button