সাংবাদিকদের ফাটিয়ে ফেলবি, পুলিশ তোদের সঙ্গে আছেঃ আ.লীগ নেতা
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ বলেছেন, ‘সাংবাদিকদের ফাটিয়ে ফেলবি, পুলিশ তোদের সঙ্গে আছে’!
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যাওয়া সাংবাদিকদের এলাকা ছাড়ার হুমকি দিয়ে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রোববার (২৮ নভেম্বর) লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের ১০ ইউপিতেও ভোট হয়। যদিও ভোটের আগেই তিনটি ইউপিতে চেয়ারম্যানরা নির্বাচিত হন।
এর আগে সন্ধ্যায় ওই এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, ভীতিকর পরিস্থিতি সর্বত্র। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর পোস্টার নেই এলাকায়। বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এলাকায় থাকতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। ভোটারদের মধ্যেও ভয়ভীতি বিরাজ করছে বলে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
৫ নম্বর চরপাতা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিদ্রোহী প্রার্থী খোরশেদ আলম জানান, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়নি। নির্বাচনের দুদিন আগে থেকে ইউনিয়নে বহিরাগতরা প্রবেশ করে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেয়। বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। এসব ঘটনা নিয়ে আমি ৯টি অভিযোগ করেছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
উপজেলার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ভোটের মাঠে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চান, সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। এর পরই পুলিশ এসে সাংবাদিকদের নানান ধরনের জেরা শুরু করে। সেখানে এসে হাজির হন রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ।
এ সময় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাকে তিনি বলেন, ‘এরা কারা? সবাইকে থানায় নিয়ে যান। এ সময় সাংবাদিকরা তাদের পরিচয় দিলে তিনি আরও ক্ষেপে যান। বলেন, ‘এখানে আপনাদের কাজ কী? আপনারা কেন এসেছেন?’
তার সঙ্গে থাকা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা পরিচয় দেওয়া একজন বলেন, ‘আপনারা তো সাংবাদিক না, আপনারা রিপোর্টার! এলাকা থেকে চলে যান।’ এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ বলেন, ‘সাংবাদিকদের ফাটিয়ে ফেলবি, পুলিশ তোদের সঙ্গে আছে।’
এ বিষয়ে অভিযোগ করলে রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি। নির্বাচনের সময় সাংবাদিকদের বাধা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিয়ম অনুযায়ী তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।
পুলিশ সুপার ড. এএইচএম কামরুজ্জামান বলেন, নির্বাচন কমিশনের বৈধ অনুমতি বা পরিচয়পত্র থাকলে সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেউ এ ধরনের কর্মকাণ্ড করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন আকন্দ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। আমরা বিন্দুমাত্র নির্বাচনী আচরণবিধির ব্যত্যয় ঘটতে দেব না।