বিদেশি বিনিয়োগের বিপক্ষে নীতি গ্রহণ করবে না সরকারঃ নৌ-প্রতিমন্ত্রী
বিদেশি বিনিয়োগের বিপক্ষে সরকার কোনো নীতি গ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ এর ‘পরিবহন ও লজিস্টিকস’ শীর্ষক কারিগরি/প্যারালাল অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার এমন কোনো অপ্রত্যাশিত নীতি কার্যক্রম গ্রহণ করবে না যা আপনাদের বিনিয়োগের বিপক্ষে যেতে পারে। আপনাদের বিনিয়োগ এই দেশের আইন দ্বারা সুরক্ষিত থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, লজিস্টিকস খাতের সামগ্রিক উন্নয়ন ও বিকাশে বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং ২০৪১ সালের বাংলাদেশের জন্য প্রণীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় লজিস্টিকস খাতকে একটি প্রাধিকারমূলক খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দুটি কর্মকৌশলের উপর ভিত্তি করে ২০২৩ সালের মধ্যে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেগুলো হলো- অধিকতর সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণ। এ দুটি কৌশল সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন একটি গতিশীল লজিস্টিক খাত। লজিস্টিক খাতের উন্নয়নে অধিকতর বেসরকারি বিনিয়োগ আনয়নে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, লজিস্টিকস খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অপরিসীম। ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের পরিবহন ও অবকাঠামো খাতে প্রায় ২৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে এবং এ খাতসমূহের প্রদত্ত সেবার জন্য বছরে প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার রয়েছে। ব্যবসার আয়তন বৃদ্ধির সঙ্গে এ বাজারও আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির মূল্য বর্তমানের ৩৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার হতে অচিরেই বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৫ সালে প্রায় ৫৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। এছাড়া আমদানি পণ্যের মূল্যও বর্তমানের ৫১ বিলিয়ন ডলার হতে বৃদ্ধি পেয়ে ৮৩ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ব্যবসা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধির সঙ্গে পণ্যাগার, সংরক্ষণাগার, কোল্ড চেইন ব্যবসা, সড়ক, নৌ, সমুদ্র এবং বিমানপথে পণ্য পরিবহন, নৌ, বিমান ও স্থলবন্দরের কার্যক্রম আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। ২০২২ সালের মধ্যে এ ব্যবসার প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ৬৪ শতাংশ। এ কারণে এফ শ্রেণির বিমান, যেমন এ-৩৮০, বি৭৪৭-৮এফ, ইত্যাদির অবতরণ ও উড্ডয়ন সহজতর করার জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
লজিস্টিকস ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কিং কমিটি, বাংলাদেশ’র কো-চেয়ার আবুল কাশেম খান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অথরিটির মহাপরিচালক মো. আবুল বাশার, পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটড সিঙ্গাপুরের রিজিওনাল সিইও ওয়ান চী ফুং, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম, ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স করপোরেশনের ভিক্টোরিয়া রিগবি ডেলমন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সোসাইটির সভাপতি নকীব খান।