Lead Newsখেলাধুলাফুটবলবিচিত্রসম্মান ও স্বীকৃতি

এবার সৌদি ক্লাবে যোগ দেয়ার কারণ জানালেন রোনালদো

অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (সিআর সেভেন) সৌদি আরবের দল আল নাসরের সাথে ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।

এখবর ইতোমধ্যে সবাই জেনেছেন। কিন্তু এরপর ইউরোপ ছেড়ে কেন মধ্য এশিয়ার এই কম প্রতিযোগিতাপূর্ণ লিগে খেলতে এলেন, এবার সে ব্যাখ্যাই দিয়েছেন রোনালদো।

সামনের ফেব্রুয়ারিতে বয়স ৩৮ পূর্ণ হবে রোনালদোর। ক্লাবের হয়ে যা যা অর্জন করার, সবই করেছেন। তাই ইউরোপে আর মন বসেনি পর্তুগিজ মহাতারকার। তবে ইউরোপ ছেড়ে আসার কারণ হিসেবে রোনালদো দেখালেন নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার ইচ্ছাকেই, ‘ইউরোপে আমি সবকিছু জিতেছি। তাই এখন নতুন অভিজ্ঞতা পেতে চাই। এজন্যই সৌদি আরবে আসা।’

নিজের ফুটবল অভিজ্ঞতা দিয়ে এশিয়ার ফুটবলকে আরো উন্নত করতে চান রোনালদো, ‘আমি আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে এশিয়ার ফুটবলকে সাহায্য করতে চাই। এখানকার দলগুলোর সম্ভাবনা আছে আরো ভালো করার।’

এছাড়াও নিজের নতুন দলের সতীর্থদের সঙ্গে দেখা করতে এবং দলকে শিরোপা জেতারে মুখিয়ে আছেন সিআর সেভেন, ‘আমি আমার সতীর্থদের সঙ্গে দেখা করতে উন্মুখ। তাদেরকে সাথে নিয়ে আল-নাসেরকে যতো সম্ভব শিরোপা জেতাতে চাই।’

বিবিসি জানিয়েছে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর ক্লাববিহীন ছিলেন রোনালদো। অবশেষে তিনি নিজের নতুন ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন। সৌদি আরবের ক্লাব আল-নাসেরে যোগ দিয়েছেন তিনি। দুই বছরের চুক্তিতে ২০২৫ পর্যন্ত দলটির হয়ে খেলবেন রোনালদো।

এখন ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বেতনভোগী হিসেবে রোনালদো প্রতি বছর ১৭৭ মিলিয়ন পাউন্ড আয় করবেন। ৩৭ বছর বয়সী এই ফুটবল মহাতারকা যোগ দেওয়ার সময় বলেন, “একটি ভিন্ন দেশে নতুন ফুটবল লিগের অভিজ্ঞতা নিতে আগ্রহী তিনি”।

আল নাসেরে রোনালদো
আল নাসেরে রোনালদো

রোনালদো আরও যোগ করেন: “আমি অনুভব করছি যে এশিয়ার সাথে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার সঠিক মুহূর্ত এটিই।”

নয়বারের সৌদি প্রো লিগ চ্যাম্পিয়ন আল-নাসর এই চুক্তিকে অভিহিত করেছে ‘ইতিহাস তৈরিকারী’ হিসেবে। ক্লাবটি জানায়, “চুক্তিটি আমাদের লীগ, জাতি এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের ছেলে ও মেয়েদের নিজেদের সেরা সংস্করণ হতে অনুপ্রাণিত করবে”।

গত গ্রীষ্মেই রোনালদো সৌদি আরবের আরেকটি দল আল হিলালের বার্ষিক ৩০৫ মিলিয়ন পাউন্ডের চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কারণ তিনি ইউনাইটেডেই খুশি ছিলেন বলে জানিয়েছিলেন।

ইউনাইটেডের হয়ে ৩৪৬টি ম্যাচে ১৪৫ গোল করা রোনালদো জুভেন্টাস ছেড়ে ২০২১ সালের আগস্টে পুনরায় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে যোগ দেন, যেখান থেকে তিনি ১১ বছর আগে পাড়ি জমিয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদে।

ইউনাইটেডের সাথে তার সাপ্তাহিক ৫ লক্ষ পাউন্ডের চুক্তির আর মাত্র সাত মাসের সামান্য বেশি বাকি ছিল। তবে দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মতিতেই উভয়পক্ষ চুক্তি বাতিল করে।

রোনালদো সম্প্রতি কাতার বিশ্বকাপ থেকে পর্তুগালের হয়ে খেলে ফিরেছেন, যেখানে তিনি ঘানার বিপক্ষে তার দলের উদ্বোধনী ম্যাচে গোল করে পাঁচটি বিশ্বকাপে গোল করা প্রথম ব্যক্তি হয়ে ইতিহাস তৈরি করেছেন।

সৌদি আরবের আল-নাসেরে কত টাকা আয় করবেন রোনালদো?
মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে আল-নাসের ক্লাবটির সঙ্গে বিরাট অংকের চুক্তি করেছেন রোনালদো। প্রতি বছর সব মিলিয়ে ১৭৩ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড কামাবেন তিনি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ঘন্টাপ্রতি ২৭ লাখ টাকা প্রায়!

তবে এই ১৭৩ মিলিয়ন পাউন্ড (২১৫৯ কোটি বাংলাদেশি টাকা) শুধুমাত্র খেলার জন্য পাবেন না রোনালদো, আল-নাসের তাকে বছরে বেতন দিবে ৬২ মিলিয়ন পাউন্ড, বাকি টাকা রোনালদো পাবেন তার ইমেজ সত্ব, বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ সহ আরো আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম থেকে।

এক নজরে আল-নাসের থেকে রোনালদোর আয় দেখে নেওয়া যাক:
প্রতি বছরে- ২১৫৯ কোটি টাকা
প্রতি মাসে- ১৭৯ কোটি টাকা
প্রতি সপ্তাহে- ৪৫ কোটি টাকা
প্রতি দিনে- ৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা
প্রতি ঘন্টায়- ২৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা
প্রতি মিনিটে- ৪৫ হাজার টাকা
প্রতি সেকেন্ডে- ৭৪৯ টাকা

চোখধাঁধানো এই আয়ের মধ্যে দিয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোই এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার, তিনি পেছনে ফেলেছেন পিএসজির কিলিয়ান এমবাপ্পেকে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − twelve =

Back to top button