Breakingধর্ম ও জীবন

মুমিনের পুরস্কার

আল্লাহতায়ালা বলেন, প্রকৃত মুমিন তারাই, যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ইমান আনয়নের পর আর সন্দেহে পড়ে না। (সূরা আল হুজুরত, আয়াত-১৫)।

নবি করিম (সা.) বলেছেন, এমন ৩টি বস্তু রয়েছে, যার মধ্যে সেগুলো বিদ্যমান থাকবে কেবল সে ইমানের স্বাদ অনুভব করতে পারবে-যার মধ্যে আল্লাহ ও তার নবির ভালোবাসা সব কিছুর চেয়ে বেশি। যে ব্যক্তি কোনো বান্দাকে কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালোবাসে। যে ব্যক্তিকে আল্লাহ কুফর থেকে মুক্তি দেওয়ার পর আবার কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে এমনভাবে অপছন্দ করে, যেমন কোনো অন্ধকূপে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অপছন্দ করে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-৪৩)।

একজন মুমিনের মধ্যে ইমানের পূর্ণতা আসার পর আল্লাহতায়ালা তাকে যেসব পুরস্কারে পুরস্কৃত করেন তা হলো-

মুমিনের অভিভাবক স্বয়ং আল্লাহ

অভিভাবক হিসাবে আল্লাহকে পাওয়া। মহা ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহ যখন কারও দায়িত্ব নিয়ে নেন, তখন তার আর কিইবা সমস্যা হতে পারে? দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগৎ তার জন্য সহজ হয়ে যায়। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহতায়ালা হলেন মুমিনদের অভিভাবক। তাদের তিনি অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে আনেন। (সূরা আল বাকারা, আয়াত-২৫৭)।

পৃথিবীর রাজত্ব দান করেন

প্রকৃত মুমিনরা জমিনের কর্তৃত্ব লাভ করবে। পবিত্র কুরআনে এসেছে, তোমাদের মধ্যকার সত্যিকার মুমিন ও সৎ কর্মশীলদের জন্য আল্লাহ ওয়াদা করেছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদেরকে পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দান করবেন। যেমনি দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তী মুমিনদের। (সূরা আন নূর, আয়াত-৫৫)।

যার ইমান নেই সে ক্ষতিগ্রস্ত

প্রকৃত ইমানদার ছাড়া সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, শপথ মহাকালের! নিশ্চয়ই সব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত; কিন্তু তারা ছাড়া, যারা ইমান এনেছে, সৎ আমল করেছে এবং পরস্পর পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পর পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে। (সূরা আল আসর, আয়াত ১-৩)।

প্রশান্ত হৃদয় দান

মুমিনদের হৃদয় শীতল ও সতেজ থাকে। আল্লাহতায়ালা বলেন, (যারা প্রকৃত মুমিন আল্লাহর স্মরণে তাদের অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। আর সত্যিকার অর্থে আল্লাহর স্মরণ দ্বারাই অন্তরে প্রশান্তি এসে থাকে। (সূরা আর র’দ, আয়াত-২৮)।

সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব

মুমিনরা মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। আল্লাহতায়ালা বলেন, যারা ইমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তারাই সৃষ্টির সেরা। তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে ঝরনাধারা প্রবাহিত। যারা সেখানে অনন্তকাল থাকবে। (সূরা আল বায়্যিনাহ, আয়াত : ৭-৮)।

সুখময় জান্নাত

প্রকৃত মুমিনরা জান্নাতের মেহমান। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, অবশ্যই যেসব লোক ইমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তাদের মেহমানদারি করার জন্য ফিরদাউসের সুসজ্জিত বাগান রয়েছে। সেখানে তারা চিরকাল বসবাস করবে। কখনো সেখান থেকে বের হতে চাইবে না। (সূরা আল কাহফ, আয়াত; ১০৭-১০৮)

একজন ইমানদার প্রকৃত মুমিন হলে সে ইমানের স্বাদ পাবে। আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও ইবাদতে অনেক বেশি প্রশান্তি পাবে। মন্দ ও অশালীন কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হবে। মুখে আল্লাহর জিকির ও হৃদয়ে আল্লাহর ভয় নিয়ে তার দিনাতিপাত ঘটবে। দুনিয়া হবে তার জন্য জান্নাতের বাগান আর পরকালে পাবে সে সম্মান, মর্যাদা সুখ অফুরান। মহান আল্লাহ সবাইকে প্রকৃত মুমিন হয়ে ওঠার তাওফিক দান করুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 5 =

Back to top button