দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রথমবারের মতো একটি ফ্লাইওভার নির্মিত হচ্ছে রাজশাহীতে। এ বছরের ডিসেম্বরে ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজ শেষে উদ্বোধন হওয়ার কথা। রাজশাহী-নওগাঁ এবং রাজশাহী-নাটোর সড়কের সংযোগ হিসেবে ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
এর ওপর দিয়ে চলাচল করবে দ্রুতগামী যানবাহন। আর নিচ দিয়ে যাতায়াত করবে ট্রেনসহ অন্যান্য গাড়ি। ঢাকার দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজটি সম্পন্ন করছে।
জানা গেছে, রাজশাহী-নওগাঁ-নাটোর চার লেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ফ্লাইওভার নির্মাণে ব্যয় হবে ২৯ কোটি ২৮ লাখ ৭৭ হাজার ৫৩২ টাকা।
বর্তমানে রাজশাহী নগরীতে ফ্লাইওভারসহ সাড়ে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ ফোর লেন সংযোগ সড়কটির নির্মাণকাজ বেশ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের আলিফ লাম মিম ভাটা থেকে পূর্বে মেহেরচণ্ডি-মোহনপুর হয়ে নাটোর রোডের ফল গবেষণা কেন্দ্র পর্যন্ত যাবে এ সড়কটি।
শহরের পূর্ব ও পশ্চিম অংশকে সংযুক্ত করতে আগামী ৫০ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনায় ১৯ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে চার লেনের এ সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে।
আর ফল গবেষণা কেন্দ্র পয়েন্টেই নির্মাণ করা হচ্ছে ২০০ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারটি, যা রাজশাহীতে প্রথম। রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাসিক এর উদ্যোগে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন আদেশ পেয়েছে এমবিআইএল-আরই (জেভি)। এছাড়া প্রকল্পের অংশ হিসেবে ফ্লাইওভার নির্মাণ করছে ডিয়েনকো লিমিটেড।
ঠিকাদারী সূত্রে জানা গেছে, সড়ক নির্মাণের জন্য ৪২ দশমিক ৩ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন রাস্তার পুরো অংশজুড়ে অসংখ্য ডোবা-গর্ত থাকায় ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ভরাট কাজ করা হয়েছে।
শুরুতে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা থাকায় সড়কের কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। তবে এখন সেটি আর নেই। বর্তমানে এর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। আশা করা যায়, খুব তাড়াতড়ি কাজ শেষ হবে।
নগরবাসীর প্রত্যাশা – ফ্লাইওভার নির্মাণের ফলে যানজট যেমন কমবে, তেমনি কম সময়ে মানুষ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে পারবে; বিশেষ করে নাটোর ও নওগাঁর সঙ্গে রাজশাহীর যোগসূত্র সহজ হবে। এছাড়া যে নকশায় ফ্লাইওভারটি নির্মিত হচ্ছে, তাতে নগরীর সৌন্দর্যও বাড়বে।
সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, প্রতিনিয়তই বাড়ছে নগরীর পরিধি। বাড়ছে মানুষও। তাই ২০৫০ সালে রাজশাহীর চিত্র মাথায় রেখেই ফ্লাইওভারটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।