Lead Newsদেশবাংলারাজনীতি

ভারতের দখলে থাকা বাংলাদেশের নদী উদ্ধার

বিনাযুদ্ধে নদীর দখল নিলো বিজিবি

দীর্ঘ পাঁচ দশক পর ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ভারতের দখলে থাকা একটি নদীর বিশাল অংশ উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর থেকেই নদীটির বাংলাদেশ সীমান্তের ঐ অংশ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ দখল করে সেখানে প্রভাব বিস্তার করে রেখেছিলো।

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (৫৮ বিজিবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিজিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জানানো হয়, কোদালিয়া নদী বাংলাদেশের অভ্যন্তর হতে দক্ষিণ দিকে প্রসারিত হয়ে মহেশপুরের মাটিলা এলাকায় ৪.৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চিহ্নিত করেছে। ১৯৬১ সালে প্রণীত বাংলাদেশ-ভারত (স্টিপ ম্যাপ সিট নম্বর-৫১) মানচিত্র অনুসারে কোদলা নদীর উল্লিখিত ৪.৮ কিলোমিটার নদী সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্য রেখার অভ্যন্তরে অবস্থিত।

ঐ বিজ্ঞপ্তি থেকে আরও জানা যায়, সম্প্রতি ভারতের দখলে থাকা কোদালিয়া নদীর প্রকৃত মালিকানা-সংক্রান্ত বিষয়টি ৫৮ বিজিবির নজরে আসে। এরপর বিজিবি প্রথমে বিভিন্ন নথিপত্র স্থানীয় প্রশাসন ও মানচিত্র থেকে নদীটির প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করে বিএসএফের অবৈধ আধিপত্য বিস্তারের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরে ৫৮ বিজিবির সদস্যরা কোদালিয়া নদী নিজেদের আয়ত্বে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমানে বিজিবি সদস্যরা প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাকার জন্য যন্ত্রচালিত বোট এবং নদীর পাড়ে দ্রুত টহলের জন্য অল টেরেইন ভেহিকেল (এটিভি) বরাদ্দ করা হয়েছে।

মহেশপুর উপজেলায় যাদবপুর ইউনিয়নের মাটিলা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন বলেন, এক সময় এই নদী থেকে প্রচুর মাছ আহরণ করা হতো। স্বাধীনতার পর কোদালিয়া নদী পাড়ের মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে বাংলাদেশের আরও অভ্যন্তরে বসবাস শুরু করলে কোদালিয়া নদীর বাংলাদেশ অংশটুকু ভারতের বিএসএফ দখল করে নেয় এবং সেখানে আধিপত্য বিস্তার করে। ফলে কৃষকরা মাঠে চাষাবাদ ও নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারতেন না।

নদীর বাংলাদেশ অংশে গেলেই বিএসএফ বাধা প্রদান করতো বলেও জানান তিনি। এতে নদীটি ব্যবহার করা নিয়ে মাটিলা গ্রামের মানুষের সঙ্গে ভারতের বিএসএফের সঙ্গে বাদানুবাদ হতো।

বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের দখল থেকে ৫ কিলোমিটার নদী উদ্ধারের পর সোমবার দুপুরে মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মো. আজিজুস সহিদ স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় কোদালিয়া নদীতে নির্বিঘ্নে যেতে পারছেন বলে জানান স্থানীয় জনসাধারণ।

বিজিবি কর্মকর্তারা নদী উদ্ধারে সহায়তার জন্য জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান এবং নদীর প্রকৃত অবস্থান এবং মালিকানা সম্পর্কে পরবর্তী প্রজন্মকে অবগত রাখার জন্য অনুরোধ জানান।

তাছাড়া নদীর বাংলাদেশ অংশে প্রয়োজনীয় সেচ এবং চাষাবাদ চালু রাখার জন্য গ্রামবাসী অনুরোধ জানায় বিজিবি। এক্ষেত্রে কখনো কোনো বাধার সৃষ্টি হলে তা সঙ্গে সঙ্গে বিজিবিকে অবহিত করতেও গ্রামবাসীর প্রতি বিজিবি সদস্যরা অনুরোধ জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 5 =

Back to top button