Lead Newsরাজনীতি

আতিকুলের ত্রিমুখী ইশতেহার

সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে ত্রিমুখী ইশতেহার উপস্থাপন করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম।

‘সবাই মিলে সবার ঢাকা’ স্লোগানকে সামনে রেখে তৈরি ইশতেহারে তিনি উন্নত বিশ্বের মতো বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নারীদের জন্য নিরাপদ নগরী, দখল ও দূষণমুক্ত নগরী, আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা, নিরাপদ সড়ক, ছিন্নমূল পুনর্বাসন, অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিক সমস্যা সমাধান, অনলাইনে সেবা প্রদান, ঢাকাকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে জনতার মুখোমুখি হওয়ার মতো বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিয়েছেন।

রোববার দুপুরে গুলশানের লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি ইশতেহার ঘোষণা করেন। ইশতেহার ঘোষণা শেষে আতিকুল বলেন, ‘আমি জানি, শত সংকট, সীমাবদ্ধতা, নাগরিক যন্ত্রণাসহ নানাবিধ সমস্যা আছে এ শহরে। ঢাকা আপনার, আমার- সবার। আমাদের একটু সচেতনতা এবং কিঞ্চিৎ সহযোগিতা এই নগরীর প্রাপ্য। যদি আমরা সবাই একটু সচেতন, আন্তরিক ও উদ্যোগী হয়ে দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত রাখি, শহর বিনির্মাণে অংশ নিই, তবে ঢাকা উত্তরে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবেই।’

তিনি বলেন, ‘এই পথযাত্রায় আমি নগরবাসীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে চাই। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায়, স্বপ্নের ঢাকাকে বাস্তব করতে চলুন একসঙ্গে এগিয়ে যাই। গড়ে তুলি সবাই মিলে সবার ঢাকা- একটি সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা।’

এ সময় আগের ৯ মাসের মেয়র থাকার অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধিকে কঠিন অনুশীলনের সময় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আবার নির্বাচিত হলে পাঁচ বছর টেস্ট খেলব।’

সকাল সাড়ে ১০টায় ইশতেহার ঘোষণার সময় নির্ধাতি থাকলেও অনুষ্ঠান শুরু হয় প্রায় ১ ঘণ্টা দেরিতে। সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে সিটি কর্পোরেশন নিয়ে নির্মিত দুটি ভিডিও দেখানো হয়। পরে ‘আতিকুল ইসলাম পিতা হিসেবে কেমন’- মেয়র প্রার্থীর মেয়ে বুশরা এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। দুপুর ১২টার দিকে ইশতেহার পড়া শুরু করেন আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, একটি শহরের প্রাণ হচ্ছে শহরের পাড়া ও মহল্লগুলো। সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে গেলে প্রতিটি এলাকা, পাড়া, মহল্লাকে আলাদাভাবে নজর দিতে হবে। এলাকাভিত্তিক সমস্যা শনাক্ত করে সেগুলোর স্থায়ী সমাধানের মধ্য দিয়ে এলাকার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। এই এলাকাভিত্তিক পরিবর্তনই নগরীর সামগ্রিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। যার ফলে এই নগরীতে বসবাস করা মানুষগুলো সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, আমার প্রধান লক্ষ্য, এই নগরীকে কেবল বসবাস উপযোগী নয়, বরং নগরবাসীর জীবনমানের উন্নতি সাধন করা। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন উপনির্বাচন ২০১৯-এ প্রদত্ত নির্বাচনী ইশতেহারের অধিকাংশ কাজই শুরু হয়েছে। আমার ৯ মাসের অভিজ্ঞতা এবং উপলব্ধিকে কাজে লাগিয়ে আগামী দিনের কাক্সিক্ষত ঢাকা গড়ার লক্ষ্য অর্জনে পেশ করছি ত্রিমুখী ইশতেহার।

আতিক বলেন, আমি কথা দিচ্ছি, আমাকে পুনরায় পূর্ণমেয়াদে নির্বাচিত করলে, লক্ষ্য অর্জনে সাধ্যের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব। সব উন্নয়ন অগ্রগতির সমন্বয় ঘটিয়ে ঢাকার প্রতিটি পাড়া-মহল্লার সমস্যা সমাধান করে গড়ব সবার প্রিয় ঢাকা, যে ঢাকা আপনাদের সবার প্রাপ্য।

যা আছে আতিকুলের ইশতেহারে-

সুস্থ ঢাকা: ইশতেহারে আতিকুল প্রথমত গুরুত্ব দিয়েছেন সুস্থ ঢাকা গড়ে তোলার ওপর। তিন বলেন, আমাদের এই নগরী কোটি মানুষের আশ্রয়স্থল। এই শহরে নাগরিকদের সুস্থতা নির্ভর করে শহরের সুস্থতার ওপর। একটি সুস্থ ঢাকা নিশ্চিত করতে হলে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা জরুরি, যা বাস্তবায়িত হলে ঢাকাবাসী আবারও গর্বের সঙ্গে বলতে পারবে- ঢাকা পৃথিবীর অন্যতম সুস্থ শহর। একটি সুস্থ ঢাকা গড়ার জন্য আমার প্রতিশ্রুতি হল- মশা নিধন করার জন্য কোটি মানুষের এই নগরে উন্নত বিশ্বের মতো ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) পদ্ধতিতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, পার্শ্ববর্তী সিটি কর্পোরেশনসহ সব সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব। এলাকাভিত্তিক উন্মুক্ত পার্ক ও আধুনিক খেলার মাঠ নির্মাণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমিনবাজারে রিসোর্স রিকভারি ফ্যাসিলিটিজ (আরআরএফ) স্থাপন করে বর্জ্য অপসারণ ও সেগুলোকে জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তরের ব্যবস্থা করব।

এছাড়া আধুনিক পশু জবাইখানা কেন্দ্র, এলাকাভিত্তিক পাড়া উৎসব, উত্তর সিটির প্রতিটি স্থাপনায় মাতৃদুগ্ধ কক্ষ নির্মাণ, বস্তিবাসীর জন্য আবাসন ব্যবস্থাসহ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। বিশেষভাবে সক্ষম এবং নারী-পুরুষ-শিশুনির্বিশেষে সবার জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক গণশৌচাগার নির্মাণ, প্রতিটি এলাকার জলাশয় দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন করা, উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন জায়গায় আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়ুদূষণ কমানো, ওয়ার্ডভিত্তিক সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে ওয়ার্ড কমপ্লেক্স তৈরি এবং মিরপুরে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব জায়গায় বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষ্য প্রাণী ক্লিনিক নির্মাণ করার পরিকল্পনার কথাও জানান আতিকুল।

সচল ঢাকা: সচল ঢাকা গড়ার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ইশতেহারে আতিকুল বলেন, ঢাকা শহরের বাসিন্দারা তাদের পাড়া-মহল্লাসহ সব রাস্তাঘাটে চলতে গেলেই নানারকম বাধার সম্মুখীন হন। রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। প্রতিটি এলাকায় পরিকল্পিত ফুটপাত, ফুটওভারব্রিজ, জেব্রা ক্রসিং, সাইকেল ও মোটরসাইকেল লেন, আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল না থাকায় নগরবাসীর অবাধ চলাচল ব্যাহত হয়। তাই ঢাকাকে একটি সচল নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আমি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করেছি।

সচল ঢাকা তৈরি করতে ফুটপাত দখলমুক্ত করে এলাকাভিত্তিক পথচারীবান্ধব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাত নেটওয়ার্ক তৈরি করব। এছাড়া হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, যানজট নিরসনে ডিএমপি, ডিটিসিএ, বিআরটিএ, ডিএসসিসি, পরিবহন মালিক সমিতিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের ঢাকা বাস রুট রেশনালাইজেশনের কাজ বাস্তবায়ন করব। পাশাপাশি নিরাপদে সড়ক পারাপারে পথচারীদের জন্য বিভিন্ন জেব্রা ক্রসিংয়ে ডিজিটাল সিগন্যাল বাটন স্থাপন, প্রয়োজন অনুযায়ী অধিকাংশ স্থানে এস্কেলেটরসহ পদচারী সেতু নির্মাণ, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা চালু, সাইকেলের জন্য আলাদা লেন ও সাইকেল পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করব। এছাড়া বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য স্থাপনা ও গণপরিবহন তৈরি, প্রতিটি মহল্লায় পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন ও সেন্সরের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার স্থান চিহ্নিত করে তা সমাধানের ব্যবস্থা এবং নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও জানান আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী।

আধুনিক ঢাকা : আধুনিক ঢাকা গড়তে পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উন্নত বিশ্বের রাজধানীগুলোর মতো ঢাকার আধুনিকায়ন না হলে বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে আমরা তাল মিলিয়ে চলতে পারব না। কাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বর্তমান সময়ে শুধু প্রয়োজনীয়ই নয়, অপরিহার্য। ঢাকা আধুনিকায়ন হলে নগরীর সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাবে।

স্বপ্নের আধুনিক ঢাকা নির্মাণে নিজের পরিকল্পনায় এই মেয়র প্রার্থী কাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কথা বলেন। এর মধ্যে রয়েছে- ঢাকাকে আধুনিক করতে ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপ ব্যবহার করে নাগরিক সমস্যার অভিযোগ গ্রহণ, সার্বক্ষণিক তদারকির ব্যবস্থা করা। এর মাধ্যমে মেয়রের সঙ্গে নাগরিকদের সরাসরি যোগাযোগ। এছাড়া বায়ুদূষণ রোধে ইলেকট্রিক বাস সার্ভিস চালু, ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে গৃহকর দেয়ার ব্যবস্থা, জন্মমৃত্যু নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ নাগরিক সেবা দেয়া, ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে ডিএনসিসির কাঁচাবাজার ও মার্কেটগুলোর আধুনিকায়নের জন্য কাঠামোগত উন্নয়নে কাজ করা হবে।

আতিকুল বলেন, ঢাকাকে স্মার্ট সিটি করতে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি এলাকাকে স্মার্ট নেইবারহুড হিসেবে গড়ে তুলে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি পাড়া-মহল্লাকে এই উদ্যোগের আওতায় আনা হবে। এছাড়া শহরের নিরাপত্তায় ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সার্বক্ষণিক ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার তৈরি করা, তরুণদের জন্য সব এলাকায় সাংস্কৃতিক ও সেবা কেন্দ্র, হেল্প ডেস্ক, ট্রেনিং সেন্টার, স্টার্ট আপ, ওয়ার্কিং স্পেস, পাঠাগার স্থাপন করা হবে। এলাকার কমিউনিটি সেন্টারগুলো আধুনিকায়ন ও বহুমুখী ব্যবহারের উপযোগী করা হবে। সেখানে ছবি আঁকা, গান শেখা, যোগব্যায়াম, আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। সবশেষে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে জনতার মুখোমুখি মেয়র শীর্ষক নিয়মিত মতবিনিময়ের ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যার সমাধানে কাজ করা হবে। তিনি বলেন, জবাবদিহির অংশ হিসেবে জনগণের কাছে মেয়র ও কাউন্সিলর ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

ইশতেহার ঘোষণা শেষে তা বাস্তবায়নে তিনি আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চান। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, আতিকের পরিবারের সদস্য এবং সংস্কৃতি ও বিনোদনজগতের অনেকেই এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ভোট চাইলেন আতিকুলের মেয়ে : অনুষ্ঠানে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আতিকুল ইসলামকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান তার মেয়ে বুশরা আফরিন। নিজের বাবা সম্পর্কে তিনি বলেন, সৎ, ব্যক্তিত্ববান ও জবাবদিহিতায় বিশ্বাসী একজন মানুষ আমার বাবা। তিনি (আতিকুল) মানুষের সঙ্গে মিশতে পারেন। তার কাছে কোনো কাজই অসম্ভব না।

তিনি বলেন, বাবার কাছে কাজ আগে। কিছুদিন আগে বিয়ে করেছি। অনুষ্ঠানে বাবা ছিলেন না। কারণ কর্পোরেশনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। বাবার কাছে কর্তব্যই আগে। যখন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হলেন, তখন এমনও হয়েছে- বাবার সঙ্গে অনেকদিন দেখাই হয়নি।

বুশরা বলেন, আমার বাবা আমাকে ছাড়া আর কাউকে আমার মতো ভালবাসে না। তিনি যেমন আমার বাবা, তেমনি একজন নগরপিতা। তা এই শহরের জন্যই। তিনি সৎ, পরিশ্রমী, মেধাবী ও ব্যক্তিত্ববান। তার প্রতিটি কাজই জবাবদিহিতার মধ্যে থাকে। বাবা সম্পর্কে যখন কথাগুলো বলছিলেন, চেয়ার থেকে উঠে এসে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খান আতিকুল।

 

আরও খবর পেতেঃ আন্তর্জাতিককর্পোরেট

prothom allo bangla news paper, prothom allo bangla news paper, prothom allo bangla news paper,

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × four =

Back to top button