ছাত্রীদের অশ্লিল ভিডিও দেখানোর অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে পিটুনি
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার শহরতলীর মাইজবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে গ্রামবাসী।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে স্কুল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবারের দাবি, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সংক্রান্ত স্থানীয় রাজনীতির জেরে তাকে ফাঁসাতে তার বিরুদ্ধে এমন ষড়যন্ত্র করছে একটি মহল।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিকালে স্কুল ছুটির পর ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে তাকে অভিভাবকদের জানায় যে, প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন ওই ছাত্রীসহ কয়েকজন ছাত্রীকে ছাদে ডেকে নিয়ে মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও দেখান। এসময় ছাত্রীরা ছাদ থেকে নেমে আসতে চাইলে শিক্ষক ওই ছাত্রীর হাতে ধরে টানাটানি শুরু করেন। খবরটি শোনার পর বিকাল ৩টার দিকে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনকে পিটুনি দেন। অবস্থা বেগতিক দেখে স্কুলের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন শিক্ষকরা।
ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার খবর চারপাশে ছড়িয়ে পড়লে কয়েক হাজার গ্রামবাসী স্কুলের চারপাশে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে তারা গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকার চেষ্টা করে। ঘটনাস্থলে ছুটে যান সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল হোসন ও কুরবাননগর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বরকত।
খবর পেয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহিদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে উদ্ধার করতে গেলে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে জনতা। এক পর্যায়ে মৃদু লাঠিচার্য করে উত্তেজিত জনতাকে হটিয়ে অবরুদ্ধ শিক্ষককে থানায় নিয়ে আসা হয়।
এদিকে, শিক্ষককে পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে আসর পূর্বে ঘটনস্থলে উপস্থিত মাইজবাড়ি গ্রামের পূর্বপাড়া ও খাইসাপাড়ার যুবকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সবখবরডককমের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও তাকে মারধর করে প্রতিপক্ষের লোকজন।
ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ছাত্রীর মা বলেন, আমি ওই শিক্ষাকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে কোন শিক্ষক কোন ছাত্রীর দিকে কুদৃষ্টি না দেয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহিদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ শিক্ষককে স্কুল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে সদর থানায় রাখা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
BdNews24, BdNews24