খেলাধুলার ক্ষেত্রে ফুটবল কথাটি শুনলেই আয়তাকার মাঠে দুদলের খেলোয়াড়কে একটি বলের পেছনে ছোটার চিত্র ভেসে উঠে। কিন্তু সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) একই মাঠে দুই বল ব্যবহার করে ফুটবল খেলার ব্যাতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে। আর এ ধারণা যিনি দিয়েছেন তিনি হলেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
জানা যায়, অধ্যাপক ইকবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যারাত অবধি ‘মঙ্গলবারের আড্ডা’ নামক খোলামেলা আলোচনায় যুক্ত হন। এমন এক আড্ডায় হঠাৎ তার মাথায় আসে ফুটবল খেলায় দুটি বলের ব্যবহার। খবর ইউএনবি’র।
ভাবনাকে বাস্তবে রূপদান করেন সেই আড্ডায় উপস্থিত শাবিপ্রবির শিক্ষকেরা। গত মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টায় শাবিপ্রবির হ্যান্ডবল গ্রাউন্ডে দুটি বল ব্যবহার করে একটি প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে খেলোয়াড় হিসেবে শাবির শিক্ষকেরাই বিবাহিত ও অবিবাহিত দলে অংশ নেন।
প্রতি দলে ৭ জন করে খেলোয়াড় অংশগ্রহণে ২৪ মিনিটের এ খেলায় প্রথমার্ধ এবং দ্বিতীয়ার্ধ ভাগ করে নেয়া হয়। আর খেলায় ১১ নম্বর জার্সি পরিধান করে মাঠে নামেন অধ্যাপক জাফর ইকবাল।
খেলায় প্রতিযোগিতার পাশাপাশি রসিকতাও ছিল। তবে খেলোয়ারদের মাঝে দুবলের ব্যবহারটা অনেকাংশে কৌতুহল ছিল। নির্ধারিত সময় শেষে বিবাহিত শিক্ষকদের দল অবিবাহিত শিক্ষকদের দলকে ৬-২ গোলে পরাজিত করে। চার গোল করে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হন লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদ হাসান।
এমন আয়োজনে প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী ইউএনবিকে বলেন, ‘আমাদের এক মঙ্গলবারের আড্ডায় বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে আমরা চিন্তা করলাম ফুটবল নিয়ে একটা ছোট এক্সপেরিমেন্ট করা যায় কিনা!
‘ফুটবল খেলায় প্রায় সব কিছু ইভেন হলেও বল মাত্র একটা তাই গোল অনেক কম হয়, তাই তখন মনে হল যদি দুইটা ফুটবল দিয়ে খেলা যায় তাইলে কত গোল হয়!’, যোগ করেন তিনি।
‘এ ব্যাতিক্রমী চিন্তা প্রথম জাফর স্যারের মাথায় আসে’ জানিয়ে শিক্ষক বিশ্বপ্রিয় বলেন, ‘সেদিন থেকেই আমাদের সবার ইচ্ছা এমন একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করার। কিন্তু সবার নানা ব্যস্ততার কারণে সম্ভব হয়নি। অনেক দিন পর জাফর স্যার আবার ক্যাম্পাসে আসায় ধারণাটার বাস্তবায়ন করা হয়।’
অধ্যাপক জাফর ইকবাল ইউএনবিকে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকদের ‘মঙ্গবারের আড্ডা’ নামে একটি আড্ডা হয় যেখানে আমরা অনেক সিরিয়াস বিষয় নিয়ে আলোচনা করি আবার মজাও করি। এক আড্ডাতে মজা করে ফুটবল মাঠে দুই বলের বিষয়ে কথা ওঠে। সেই কথার উপর শিক্ষকেরা এ খেলার আয়োজন করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘খেলাটি আমার কাছে প্রতিযোগিতা না, মজার ব্যাপার। আমি দর্শক হিসেবে খেলাটি উপভোগ করেছি। খেলোয়াড় হিসেবে ছোটোবেলায় ফুটবল খেলা হয়েছে, এখন আবার শিক্ষকদের সাথে খেলা হলো। তবে ফুটবল মাঠে দুই বলের ব্যবহার আদৌতে সম্ভব হবে কিনা আমি সন্দিহান।’