বিচিত্র

মাথা ন্যাড়া করার পেছনেও করোনাভাইরাস!

ন্যাড়া বেলতলায় যাক কিংবা না যাক, ফেসবুকে সে ছবি আপলোড করবেই। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চোখ রাখুন। দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিনই যশোরে কেউ না কেউ মাথা ন্যাড়া করে ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করছেন। রীতিমতো মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক পড়ে গেছে। করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে এমন দৃশ্যে মানুষের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।

মাথা ন্যাড়া করলে চুল পড়া কমে যায়, এমন কথা প্রচলিত আছে। কিন্তু মাথা ন্যাড়া করলে অনেকে বিরূপ মন্তব্য করেন; অনেকে আবার মশকরা করতে ন্যাড়া মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বিরক্ত করে বসেন। এসব কারণে অনেকে চাইলেও ন্যাড়া করতে পারেন না।

যশোরে সম্প্রতি মাথা ন্যাড়া করেছেন ও ফেসবুকে ছবি প্রকাশ করেছেন, এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এখন সবাইকে গৃহবন্দী থাকতে হচ্ছে। কত দিন পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তাঁরা স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরবেন, তার নিশ্চয়তা নেই। এই সুযোগে মাথা ন্যাড়া করে নিচ্ছেন। বাইরে বের না হওয়ায় সামনা-সামনি কোনো বিরূপ মন্তব্য শোনার বা কারও মাধ্যমে বিরক্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তা ছাড়া সরকারি নির্দেশনায় এখন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো সেলুনগুলোও বন্ধ। দীর্ঘদিন সেলুনে যেতে না পারায় মাথায় চুল বেড়ে যাচ্ছে। গরমের এই সময়ে মাথা চুলকাচ্ছে। তাই বাড়িতে বসেই মাথা ন্যাড়া করে ফেলছেন। কর্মস্থলে ফেরার আগেই মাথায় নতুন চুল গজিয়ে যাবে; আবার চুল পড়া বন্ধ হবে।

যাঁরা এভাবে ন্যাড়া করেছেন, তাঁদের একজন মাইকেল মধুসূদন ডিবেট ফেডারেশনের চেয়ারম্যান জহির ইকবাল। যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের এই বাসিন্দা বলেন, ‘চুল পড়ে যাচ্ছে। শুনেছি, মাথা ন্যাড়া করলে চুল পড়া বন্ধ হয়। করোনাভাইরাসের কারণে বাড়িতেই থাকছি। ভাবলাম, এই সুযোগে মাথা ন্যাড়া করে ফেলি। যদি সুফল পাওয়া যায়। তাই চুল ফেলে দিলাম।’

যশোর শিক্ষা বোর্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মাহবুব উল্লাহও মাথা ন্যাড়া করেছেন। তিনি কর্মস্থল বন্ধ থাকায় এই কটা দিন যশোর শহরের খোলাডাঙ্গা এলাকার বাড়িতেই আবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘চুল বেড়ে যাওয়ায় গরমে ঘেমে মাথা চুলকাচ্ছিল। এদিকে সেলুন সব বন্ধ। চুল ছাঁটিয়ে নেওয়ার উপায় নেই। বাড়িতে গিয়ে ছোট ভাইকে বললাম, ব্লেড ধর। মাথা ন্যাড়া করে দে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. ইউনুচ আলী। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হওয়ায় যশোরের চৌগাছা উপজেলার হুগোলডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে আছেন। তিনি বলেন, ‘অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল মাথা ন্যাড়া করার। কিন্তু লোকলজ্জার কারণে এত দিন ন্যাড়া করতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয় অনেক দিন ছুটি। তাই বাড়িতে এসেই আমরা তিন বন্ধু একসঙ্গে মাথা ন্যাড়া করে ফেলেছি। মাথা ন্যাড়া করা ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে দিয়েছি। গরমে মাথা থেকে চুল ফেলে দিয়ে ভালোই লাগছে।’

যশোর শহরের চারখাম্বা মোড়ের সীমা হেয়ার কাটিং সেলুনের স্বত্বাধিকারী নিরঞ্জন রায় বলেন, ‘বাড়ি গিয়ে চুল ছাঁটানোর জন্য দু-একজন ফোন দিচ্ছেন। পরিচিত মানুষ হলে বাড়িতে গিয়ে চুল কেটে দিয়ে আসছি। এ জন্য একটু বেশি টাকা নেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘সেলুন বন্ধ। সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকারি সহায়তাও তো পাচ্ছি না।’ সূত্র প্রথম আলো।

 

আরও খবর পেতে দেখুনঃ করোনাভাইরাস নিউজ বিডিভাইরাল নিউজ বিডি

Covid19 News World, Covid19 News World

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 1 =

Back to top button