সকল জল্পনা-কল্পনা শেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
ঢাকার কেরাণীগঞ্জে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয় রাত ১২টা ১ মিনিটে। রোববার প্রত্যুষেই অর্থাৎ শনিবার দিবাগত রাতে এ ফাঁসি কার্যকরের সময় সিভিল সার্জন, পুলিশ ও কারা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাজেদের ফাঁসি কার্যকরের জন্য সময় নির্ধারণ করে শনিবার বিকালে আদেশ দেয়। এরপর ফাঁসি কার্যকরে জল্লাদ শাজাহানের নেতৃত্বে ১০ জন জল্লাদ ভূমিকা রাখে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ পাবার পর কারা কর্তৃপক্ষ আব্দুল মাজেদের ওজন পরিমাণ ইট বস্তায় ভরে রশি দিয়ে মহড়া দেয়।
তবে এর আগেই স্বজনদের সঙ্গে আব্দুল মাজেদকে শেষ সাক্ষাত করানো হয় শুক্রবার সন্ধ্যায়। কেন্দ্রীয় কারাগারে মাজেদের স্ত্রী, শ্যালক ও চাচা শ্বশুরসহ পরিবারের পাঁচজন সদস্য দেখা করেন। কারা কর্তৃপক্ষই তাদেরকে ডেকে আনেন।
মাজেদের ফাঁসির মধ্য দিয়ে কেরাণীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নতুন ফাঁসির মঞ্চে ফাঁসি কার্যকর শুরু হলো।
দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে কলকাতায় আত্মগোপনে ছিলেন ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ। ভারতজুড়ে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সম্প্রতি তিনি ঢাকায় আসেন। এরপর গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টার পর রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
আদালত থেকে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর মাজেদ শেষ সুযোগ হিসেবে নিজের দোষ স্বীকার করে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন। সেই আবেদন গত বুধবার রাতে খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি।
এর পর তার ফাঁসির প্রক্রিয়া শুরু করে কারা কর্তৃপক্ষ। জল্লাদ শাহজাহানকে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়। তার সঙ্গে তরিকুল, সোহেলসহ ১০ জন জল্লাদের একটি টিম তৈরি করে কারা কর্তৃপক্ষ।
সবশেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ যাওয়ার পর তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পুরো প্রস্তুতি নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। এরপর শনিবার রাতে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।