Lead Newsক্রিকেটখেলাধুলা

ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ, জিতল স্বপ্নের বিশ্বকাপ

লক্ষ্যটা খুব একটা বড় নয়, বিশ্বকাপ জিততে বাংলাদেশের চাই ১৭৮ রান। এই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে লাল-সবুজের দলের যুবারা বেশ আত্মবিশ্বাসী শুরু করে। মাঝখানে দ্রুত উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে গেলেও ইমন ও আকবরের চমৎকার ব্যাটিং দৃঢ়তায় তিন উইকেটের দারুণ জয় ঘরে তোলে বাংলাদেশ। জিতে স্বপ্নের বিশ্বকাপ।

যা পারেননি সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মিরাজরা, তা করে দেখালেন ইমন, শাহাদাত ও জয়রা। বৈশ্বিক কোনো আসরে শুধু ফাইনালেই উঠেনি, ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশের যুবারা।

অবশ্য চার বছর আগে ঘরের মাঠে সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে চোখের জলে মাঠ ছেড়েছিলেন লাল-সবুজের দলের যুবারা। ঠিক চার বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সাফল্যে উদ্ভাসিত হলেন যুবারা।

অবশ্য ৪১ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১৬৩/৭। শেষ ৯ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১৫ রান। তখন বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। পরে খেলা শুরু হলে বৃষ্টি আইনে ৩০ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৭ রান। তা জিতে শিরোপার উল্লাস করে বাংলাদেশ।
যদিও ছোট লক্ষ্যে দলের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানই ব্যর্থ হয়েছেন। তানজিদ হাসান তামিম (১৭), মাহমুদুল হাসান জয় (৮), তৌহিদ হৃদয় (০), শাহাদাত হোসেন (১) ও শামিম হোসেন (৭) দ্রুত আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে কঠিন অবস্থার মুখে পড়ে যায় দল।
সেখান থেকে সপ্তম উইকেটে ইমন ও আকবর ৪১ রানের জুটি গড়ে দলকে আশা জাগান। আকবর ৪৭ রান করে সাজ ঘরে ফেরলেও। একপাশ আগলে রাখেন আকবর। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে খেলেন ৪৩ রানের দারুণ একটি ইনিংস।

বল হাতে বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছেন ভারতের লেগ স্পিনার রবি বিশ্বনাই। তিনি ১০ ওভার বল করে ৩০ রানে চার উইকেট নেন। সুশান্ত মিশ্র পান দুই উইকেট।
এর আগে দারুণ বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশের যুবারা ১৭৭ রানে আটকে ফেলে ভারতকে। দলটির পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৮ রান করেন ওপেনার জয়সাল।

টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। আঁটসাঁট বোলিংয়ে শুরুটা দারুণ করেন বাংলাদেশের বোলাররা। শুরু থেকেই দুই ওপেনার জয়সাল ও দিব্যানশ সক্সেনার পরীক্ষা নেন শরিফুল-সাকিব। চমৎকার মেডেন দিয়ে ইনিংসের শুরু করেন শরিফুল। দ্বিতীয়টিও মেডেন ওভার করেন সাকিব।

প্রথম ১০ ওভারে ৪৯টি ডট বল খেলে মাত্র ২৩ রান নেয় ভারত। এর মধ্যেই প্রথম উইকেট তুলে নেন অভিষেক দাস। ৬.৪ ওভারে ফিরিয়ে দেন সাক্সেনাকে। ফেরার আগে ১৭ বল খেলে দুই রান করেন ভারতীয় ওপেনার।
এরপর অবশ্য দ্বিতীয় উইকেটে তিলক ভার্মাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন যশস্বী জয়সাল। দুজন মিলে গড়েন ৯৪ রানের জুটি। ২৯ ওভারে সেই প্রতিরোধ ভাঙেন তানজিম হাসান সাকিব। ওভারের শেষ বলে সাকিবের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে শরিফুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিলক ভার্মা। ফেরার আগে ৩৮ রান করেন তিনি, সাকিব পান নিজের প্রথম শিকার।

ভারতীয় শিবিরে তৃতীয় আঘাত হানেন রাকিবুল হাসান। ভারতীয় অধিনায়ক প্রিয়ম গার্গকে সাজেঘরে পাঠিয়ে নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন রাকিবুল। বাঁ-হাতি স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল মোকাবিলা করতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ তুলে দেন প্রিয়ম। ফেরেন সাত রানে, ভারত হারায় তৃতীয় উইকেট।

তবুও টিকে ছিলেন জয়সাল। ধীরে ধীরে এগিয়ে নিচ্ছিলেন ভারতকে। ৩৯.৫তম ওভারে জয়সালের প্রতিরোধ ভাঙেন শরিফুল। ১২১ বলে ৮৮ রান করে ফেরেন ভারতীয় ওপেনার। পরের বলে ভীরকেও ফিরিয়ে দেন তিনি। ১৫৬ রানে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর অবশ্য বেশিদূর যায়নি ভারতের ইনিংস। আগুন ঝরানো বোলিংয়ে ভারতকে চেপে ধরেন শরিফুল-অভিষেকরা। ফলে ৪৭.২ ওভারে ১৭৭ রানে থামে ভারতের ইনিংস।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৪০রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন অভিষেক দাস। সমান দুটি করে উইকেট নেন শরিফুল-সাকিব। ২৯ রান দিয়ে রাকিবুল হাসান নেন একটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত : ৪৭.২ ওভারে ১৭৭ (জয়সাল ৮৮, সাক্সেনা ২, তিলক ৩৮, প্রিয়াম ৭, জুরেল ২২, ভীর ০, অঙ্কলেকার ৩, রবি ২, মিশরা ৩, কার্তিক ০, আকাশ ১; শরিফুল ১০-১-৩১-২, সাকিব ৮.২-২-২৮-২, অভিষেক ৯-০-৪০-৩, তৌহিদ ৪-০-১২-০, শামীম ৬-০-৩৬-০, রাকিবুল ১০-১-২৯-১)।

 

আরও খবর পেতেঃ খেলাধুলাভাইরাল

Bangladesh Cricket U19, Bangladesh Cricket U19

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − eleven =

Back to top button