Lead Newsআন্তর্জাতিক

দীর্ঘ তিন বছর লড়াইয়ের পর স্ত্রী, সন্তানকে কাছে পেলেন উইঘুর মুসলিম সালাম

তিন বছর লড়াই করে চীনের জিনজিয়ান থেকে স্ত্রী-সন্তানকে মুক্ত করেছেন উইঘুর মুসলিম সাদ্দাম আবদুস সালাম। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার সিডনিতে স্ত্রী নাদিলা উমায়ের এবং তিন বছর বয়সী সন্তান লুৎফির দেখা পান।

কূটনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে পরিবারটিকে জিনজিয়ান ছাড়ার অনুমতি দেয় চীন। চীনা উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘু কমিউনিটির সদস্য উমায়ের। মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত জিনজিয়ানে গৃহবন্দি ছিলেন তিনি।

সিডনি বিমানবন্দরে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে সাক্ষাতের একটি আবেগময় ছবি শুক্রবার সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন আবদুস সালাম। ২০১৭ সালে তার শিশু সন্তানের জন্ম হয়। তাকে প্রথমবারের মতো কাছে পেয়েছেন আবদুস সালাম। টুইটে তিনি বলেন, ধন্যবাদ অস্ট্রেলিয়া। ধন্যবাদ সবাইকে।

প্রায় এক দশক ধরে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন আবদুস সালাম। ২০১৬ সালে তখনকার মেয়েবন্ধু উমায়েরকে বিয়ে করার জন্য চীন যান তিনি। বিয়ের পর কাজের জন্য ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসেন আবদুস সালাম। উমায়ের স্পাউস ভিসা পাওয়ার জন্য চীনে অপেক্ষা করছিলেন।

ওই বছরই সন্তানের জন্ম দেন উমায়ের। চীনের যাওয়ার জন্য আবদুস সালাম ভিসা চাইলে তা প্রত্যাখ্যান করে চীনা সরকার। সন্তান জন্ম দেওয়ার কিছুদিন পরই উমায়েরকে আটক করে চীনা কর্তৃপক্ষ। দুই সপ্তাহ পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় তার পাসপোর্ট। করা হয় গৃহবন্দি।

আবদুস সালামের আবেদনের প্রেক্ষিতে লুৎফিকে স্বীকৃতি দেয় অস্ট্রেলিয়া। উমায়ের অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক নন। তা সত্ত্বেও গেল দু’বছরে বেশ কয়েকবার চীনের কাছে তাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আহ্বান জানায় অস্ট্রেলিয়া।

ফেব্রুয়ারিতে চীনা কর্তৃপক্ষ জানায়, চীনের আইন, ওই দম্পতির বিয়েকে স্বীকৃতি দেয় না। উমায়ের নিজের ইচ্ছায় চীনে বসবাস করছেন। অস্ট্রেলিয়ার একটি টিভি অনুষ্ঠানে চীনা এক কর্মকর্তা এ দাবি করেন।

তারপরই, আবদুস সালাম একটি ভিডিও টুইটারে পোস্ট করেন। যেখানে উমায়েরকে বলতে দেখা যায়, ‘আমি চীন ত্যাগ করতে চাই, আমার স্বামীর সঙ্গে থাকতে চাই।’ উমায়েরের এ ভিডিওতে সময়, তারিখ সবই উল্লেখ করেন আবদুস সালাম।

যে খবর শোনার জন্য আবদুস সালাম-নাদিলা উমায়ের দম্পতি অপেক্ষা করছিলেন তা জানতে তাদের আরও ছয় মাস অপেক্ষা করতে হয়। বিবিসিকে তাদের আইনজীবী মিচেল ব্র্যাডলি জানান, চীন থেকে তাদের অস্ট্রেলিয়ায় আসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে তা গেলো দু’মাস আগে জানতে পারি।

৪৮ ঘণ্টা বিমানভ্রমণ শেষে সিডনিতে স্ত্রী সন্তানেকে কাছে পান আবদুস সালাম। সাংহাই, হংকং, পোর্ট মোরেসবি থেকে ব্রিসবেন, সবশেষে সিডনিতে পৌঁছান উমায়ের এবং লুৎফি। অবিশ্বাস্য এ কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান আবদুস সালাম। পাশে থাকার জন্য আইনজীবী এবং গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

‘সত্যিই এদিন পাবো কল্পনায়ও বিশ্বাস করতে পারিনি। আন্তরিকভাবে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই, যারা আমাদের একত্রিত করতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। প্রত্যেক উইঘুর তার প্রিয়জন, পরিবারের সঙ্গে পুনরায় একত্রিত হবে, এ স্বপ্ন দেখি আমি। বলেন আবদুস সালাম।

আরও সংবাদ পেতে দেখুনঃ আন্তর্জাতিক সংবাদ আজকের ভাইরাল নিউজ

Bangladeshi News24, Bangladeshi News24

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × one =

Back to top button