আবরার হত্যা মামলা বদলির আদেশ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলা বদলির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কায়সারুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার নথি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় বিচারক এ আদেশ দিয়েছেন। পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য মামলাটি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের কাছে পাঠানো হবে। এরপর মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হবে।
গত বছর ১৮ নভেম্বর এই মামলায় পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। এরপর ৫ জানুয়ারি তাদের গ্রেফতারে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য আদেশ দেয়া হয়।
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও পলাতক বাকি আসামিরা হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার শুরু হবে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
এর আগে ১৩ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এর বাইরে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আরও ৬ জনের জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনসহ মোট ২২ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে ৬০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এবং ২১টি আলামত ও ৮টি জব্দ তালিকা আদালতে জমা দেয়া হয়েছে।
এজাহারনামীয় আসামিরা হল-মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা ও এএসএম নাজমুস সাদাত।
এজাহারবহির্ভূত ৬ জন হল-ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, এসএম মাহমুদ সেতু ও রাফি। এর মধ্যে ১৬ জনের নাম হত্যা মামলার এজাহারে উল্লেখ ছিল। বাকিদের নাম তদন্তে উঠে এসেছে।
প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে ৫ অক্টোবর শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলিট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন, সূত্র যুগান্তর।
আরও নতুন খবরঃ শিক্ষাঙ্গন – আবরার হত্যা
Tag: Bdnews24 in Bangla, Bdnews24 in bangla news