খাদ্যাভ্যাসস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

শীতে গুড় খেলে যেসব রোগ থেকে মুক্তি মিলবে

এই মৌসুমে গুড় না খেলে কি চলে? শীতের এ সময় পিঠা-পায়েসে গুড়ের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অনেকে তো আবার এতোটাই গুড়প্রেমী যে সারা বছরই এটি সংগ্রহ করে থাকেন। তবে জানেন কি? মিষ্টি এই উপাদানটি চিনির বিকল্প হিসেবে বেশ ভালো।

আখ বা খেজুরের রস থেকে তৈরি করা মিষ্টি হল গুড়। তবে অনেক দেশে পামের রস থেকেও গুড় তৈরি করা হয়। রস সংগ্রহ করার পরে তা বড় পাত্রে সংরক্ষণ করা হয় এবং তা কিছুক্ষণ স্থিরভাবে রেখে দিয়ে জ্বাল দেয়া হয়। এই রস আগুনের তাপে ফুটে ওঠে এবং গুড়ে পরিণত হয়। যেহেতু এটা প্রাকৃতিক মিষ্টি তাই এর আছে নানা উপকারিতা।

শীতকালে গুড় খেলে শরীর সুস্থ থাকে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য, লিভারের সমস্যা, ওজন কমাতে, উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন সমস্যায় ঘরোয়া টোটকা হিসেবে এর ম্যাজিক চোখে পড়ার মতো। এবার তবে জেনে নিন গুড়ের বিভিন্ন উপকারী দিকগুলো সম্পর্কে-

১. গুড় শরীরে তাপ উৎপাদন করে এবং শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এতে আছে উচ্চ মানের ক্যালোরিফিক, যা শরীর উষ্ণ রাখে এবং শক্তি যোগায়। এই গুণের জন্য গুড় নানা রকম অসুখ যেমন- সর্দি-কাশি ও সাধারণ ঠাণ্ডার কারণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ক্ষতিকর অনুজীব বৃদ্ধি হ্রাস করতে সাহায্য করে।

২. মাসিকের সময় সব নারীই শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্ত থাকেন! এসময় সামান্য গুড় ম্যাজিকের মতো কাজ করে। কারণ এতে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। গুড় আমাদের এন্ডোরফিনস হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে। যে হরমোন সুখের অনুভূতি দেয়। এছাড়াও সামান্য গুড় খেলে এসময় হওয়া পেটে ব্যথাও কমে যায়।

৩. গুড়ে থাকে নানান খনিজ উপাদান। যেমন- লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, সেলেনিয়াম এবং পটাশিয়াম। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং সংক্রমণ দূরে রাখতে সহায়তা করে।

৪. গুড় গলার সমস্যা যেমন- কফ, গলাব্যথা, ফোলা বা খুসখুস করা দূর করত সাহায্য করে। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা যেমন-কফ, বা বুকে কফ জমাট বাঁধা, রক্ত প্রবাহে সমস্যা ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে।

৫. গুড় রক্ত পরিষ্কার করে। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। আর অবাঞ্ছিত উপাদান দূর করে।

৬. শীতের শুষ্ক ঠাণ্ডা বাতাস জীবাণু বিস্তারের জন্য উপযুক্ত। এ কারণেই আমাদের শরীর রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

৭. গুড় শরীর থেকে অবাঞ্ছিত উপাদান দূর করতে সাহায্য করে। পাকস্থলী, অন্ত্র, ফুসফুস এবং খাদ্যনালী সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

৮. চিনির বিকল্প হিসেবে গুড় খেলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভবানা কমে যায়। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে। যা কোষের ভারসাম্য রক্ষা করে শরীরের তরল পদার্থকে নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে পেটের অতিরিক্ত ফোলা বা ফাঁপাভাব কমতে পারে। পাশাপাশি পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতাও বাড়ে।

৯. বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জয়েন্টের ব্যথায় কাবু হয়ে পড়েন বৃদ্ধরা। এসময় তাদের খাবারের পর দুধ বা আদা ফুটানো পানির সঙ্গে গুড় মিশিয়ে খাওয়ান। এতে জয়েন্টের ব্যথা তো কমবেই সঙ্গে অ্যানার্জিও বাড়বে।

১০. গর্ভবতী মায়ের জন্য গুড় এক অনবদ্য খাবার। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। যা অ্যানিমিয়া বা রক্ত স্বল্পতার সমস্যায় বেশ কার্যকর। এছাড়াও দুর্বলতা কাটাতে গুড়ের বিকল্প নেই!

বলা যায়, গুড় সাধারণ যে কোনো অসুখ থেকে রক্ষা করতে শরীরকে শক্তি যোগায়, সূত্র: মাইইন্ডিয়া।

 

আরও খবরঃ দৈনিক স্বাস্থ্য কথাগুড় খাওয়ার ১৫ গুণ!

tag: Latest health news today, Latest health news  update today

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine + thirteen =

Back to top button