লাইফস্টাইল

সুস্থ থাকতে কখন ও কতক্ষণ ঘুমাবেন?

ঘুমের সঙ্গে সুস্থ-অসুস্থতার সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। যারা বেশি রাত করে ঘুমান আর ওঠেন দেরি করে, তাদের রোগ বেশি হয়– এই তথ্য চিকিৎসকরা বহুদিন ধরে দিয়ে আসছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে– সুস্থ থাকার জন্য ঘুমানোর আদর্শ সময় কোনটি, আর কতক্ষণই বা ঘুমাতে হবে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে– বিশ্বজুড়ে ১৫৩টি গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কম ঘুমের কারণে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং মোটা হয়ে যাওয়ার সম্পর্ক আছে। ৫০ লাখ মানুষের ওপর এসব গবেষণা চালানো হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, একটানা কয়েক রাত ঘুম কম হলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘ অনিদ্রা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে দেহঘড়ির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।

একটি গবেষণায় এও দেখা গেছে যে, ঘুম কম হলে ক্ষুধার তীব্রতা বাড়ে এবং এতে বেশি খাবারের চাহিদা তৈরি হয়। ফলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিভ্রম তৈরি হতে পারে।

কম ঘুমানো মানুষ বলতে তাদের বোঝানো হয়েছে, যারা রাতে ৬ ঘণ্টার কম সময় ঘুমায়। অন্যদিকে বেশি ঘুমানো মানুষ বলতে তাদের বোঝানো হয়েছে, যারা ৯ কিংবা ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমায়।

বয়ঃসন্ধিকালের আগ পর্যন্ত প্রতি রাতে ১১ ঘণ্টা ঘুমানোর জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে গবেষণায়। নবজাতকের জন্য প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়েছে যুক্তরাজ্যের ওই গবেষণায়। যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৯ বছর তাদের প্রতিরাতে ১০ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের মস্তিষ্কবিষয়ক গবেষক শেন ওমারা গবেষণার প্রতিবেদন নিয়ে বলেন, শুধু কম ঘুমের কারণেই স্বাস্থ্য খারাপ হয় কিনা সেটি বলা খুব কঠিন। তবে একটির সঙ্গে আরেকটির সম্পর্ক আছে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যারা কম ব্যায়াম করেন, তারা শারীরিকভাবে কম ফিট থাকেন। যার ফলে বেশি ঘুম পায় এবং নিজেকে ক্লান্ত মনে হয়। আবার ক্লান্ত থাকার কারণে ব্যায়াম করা কমে যায়।

অনেকে আছেন, যারা সাংঘাতিকভাবে ঘুমবঞ্চিত। রাতে এক-দুই ঘণ্টার বেশি তাদের ঘুম হয় না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর কারণে স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়।

যুক্তরাজ্যের ৪ লাখ ৩৩ হাজার মানুষের ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, সকালে তাড়াতাড়ি ওঠা ব্যক্তিদের চেয়ে রাতজাগা মানুষের অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা ১০ শতাংশ বেশি। গবেষণায় দেখা যায়, দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার কারণে বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক জটিলতার শিকার হতে হয়।

গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক ক্রোনবায়োলজি জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, যে ব্যক্তি নিয়মিত ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন, তার গড় আয়ু রাতজাগা ব্যক্তিদের থেকে সাড়ে ৬ বছর বেশি।

রাত জাগার বদভ্যাস যারা গড়ে তুলেছেন, তাদের ৯০ শতাংশ বিভিন্ন মানসিক ব্যাধির শিকার হন। ৩০ শতাংশের থাকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। এ ছাড়া স্নায়ুবিক সমস্যা থেকে শুরু করে অন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

আরও সংবাদ পেতে দেখুনঃ সম্মান ও স্বীকৃতি ইতিহাসের ডায়েরী

Lifestyle News, Lifestyle News, Lifestyle News

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + nineteen =

Back to top button