‘শুধু প্রধানমন্ত্রীকে একনজর দেখার জন্য নৌকা নিয়ে হাজির হই’
আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী ২১তম জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিতে আজ শুক্রবার ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেছেন অসংখ্য মানুষ। হাতে ব্যানার-ফেস্টুন ও নৌকার বিভিন্ন সাজ নিয়ে ঐতিহাসিক এই উদ্যানে উপস্থিত হচ্ছেন তাঁরা।
তাঁদের মধ্যে একজন ইসাক মাস্টার। প্রায় ১০০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ এসেছেন সম্মেলনে। আরেকজন কবির হোসেন, বিভিন্ন সম্মেলন ও প্রোগ্রামে পেটের দায়ে নৌকার ব্যাজ বিক্রি করেন তিনি। এসেছেন গোপালগঞ্জ থেকে। পথে পথে কবিতা আবৃত্তিও করে বেড়ান তিনি। এ থেকেই খুশি হয়ে কেউ কেউ তাঁকে সাহায্য করেন। তাঁর প্রিয় কবিতা, ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়।’
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে সঙ্গে করে মাথায় নৌকার সাজ নিয়ে এসেছেন আকরাম। এক সন্তানের বয়স দুই, আরেক সন্তানের বয়স ছয়। জাতীয় শ্রমিক লীগের সদস্য তিনি। আকরাম বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে ভালোবাসি। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন। শেখ হাসিনা সোনার বাংলা গড়তে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাই তাঁকে ভালোবেসে কাছ থেকে একনজর দেখার জন্য যেখানেই আওয়ামী লীগের বড় কোনো সম্মেলন হয়, সেখানেই পরিবার ও নৌকা নিয়ে হাজির হই।’
সিদ্দিক মিয়ার দুই ছেলে শাকিব ও আশিক। একজনের বয়স আট, আরেকজনের বয়স ছয়। বাবার সঙ্গে সম্মেলনে এসেছে তারা। নেত্রকোনা থেকে নৌকাসজ্জিত ভ্যানে করে রওনা দিয়ে পাঁচ দিন পর গতকাল রাজধানীতে পৌঁছায় তারা। কেন সম্মেলনে আসা জিজ্ঞেস করতেই শাকিব বলে, ‘বাবা বলেছে, সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। তাঁকে ভালোবাসি, তাঁর সঙ্গে একবার দেখা করে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
গোলাম মোস্তফা এসেছেন কুষ্টিয়া থেকে। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তিনি। মোস্তফা বলেন, ‘সৎ সংগঠনকে আমরা চাই।’
গাজীপুরের কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট শামছুল আলম। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠনকে আরো শক্তিশালী দেখতে চাই। এ জন্য নেত্রী যা-ই বলবেন, আমরা তাতেই সম্মতি দেব।’
আজ বিকেল ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনকে ঘিরে সারা দেশেই দলটির মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে, সূত্র এনটিভি অনলাইন।
জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধনের পর ২৫ মিনিটের একটি উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করা হবে। সেখানে তুলে ধরা হবে আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য।
এবারের জাতীয় কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের স্লোগান হচ্ছে ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে/ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ/ এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ’।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে প্রায় সাত হাজার কাউন্সিলর অংশ নেবেন। সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন ২১ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনকে নির্বিঘ্নে করতে ঢেলে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবকরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে সম্মেলনস্থল, প্রবেশপথসহ চারপাশে দলীয় স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন সম্মেলনের শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
২১তম সম্মেলনে কাউন্সিলর, ডেলিগেটসহ ৫০ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন। এবার বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
আরও জানুনঃ সম্মান ও স্বীকৃতি ও শেখ হাসিনা
Tag: News24 Breaking, Breaking News24