দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা শেষে পদ্মা সেতুর ৪১তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে যুক্ত হয়েছে পদ্মার দুই প্রান্ত। এমন কর্মযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করতে গতকাল বৃহস্পতিবার পদ্মার পাড়ে ভিড় করেছিলেন হাজারো মানুষ। বিকেল থেকেই দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসব আর আমেজ দেখা দেয়। তারা হাতে বেলুন আর নানা রঙের পোশাক পরে সেখানে উপস্থিত হয়। কিন্তু করোনার কারণে বাড়তি সতর্কতা ও নিরাপত্তা নেন প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
পদ্মা সেতু পুরো দৃশ্যমান হওয়ার পর থেকেই উপস্থিত দর্শনার্থীদের মধ্যে বিশেষ উৎসব-আমেজ বিরাজ করছে। ইতিহাসের অংশ হওয়ার জন্য অনেকেই আসছেন পদ্মায়। দুই পারের এ সেতু বন্ধনকে ঘিরে উদ্বেলিত মানুষ। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের মধ্যে ভালো লাগা কাজ করছে। কারণ, সেতুটি চালু হলে এই অঞ্চলের মানুষসহ গোটা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী অধ্যায় রচিত হবে। জাতীয় অর্থনীতির চাকায় গতি বাড়বে।
এদিকে, শরীয়তপুরের পদ্মা সেতু জাজিরা প্রান্তে এক্সপ্রেস ওয়ে জিরো পয়েন্টে গতকাল সন্ধ্যায় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা বেলুন ওড়ানো, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও আতশবাজির মধ্য দিয়ে আনন্দ উল্লাসের আয়োজন করেন। শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর আয়োজনে স্থানীয় মহব্বত খান ও বাবুল আকনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই আয়োজন করা হয়। শরীয়তপুরবাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে পদ্মা সেতু বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন উল্লসিত মানুষ।
এ আনন্দ উল্লাসে যুক্ত হন শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী। স্বপ্ন বাস্তবায়ন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তাঁরা।
শরীয়তপুর ডামুড্যা থেকে পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসানো দেখতে আসেন স্বপ্ন। তিনি জানান, ‘গতকাল সকাল সোয়া ১০টার দিকে নিরাপত্তার জন্য কাছে যেতে পারছিলাম না। কিন্তু নদীর তীরে দাঁড়িয়েও যে আনন্দ লাগছে, তা বোঝাতে পারব না। আমরা অপেক্ষায় আছি, সেতু ব্যবহার করে কবে ঢাকা থেকে বাড়ি পৌঁছাব।’
জাজিরা উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মহব্বত খান জানান, পুরো পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হওয়া শুধু শরীয়তপুরবাসীর খুশি না, পুরো দক্ষিণবঙ্গের সবাই খুশি। আমরা যেমন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ঋণী, আজ পদ্মা সেতু পুরো দৃশ্যমান হওয়াতে জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছেও চির ঋণী হয়ে থাকল শরীয়তপুরসহ দক্ষিণবঙ্গের মানুষ।
শরীয়তপুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন মুন্সি বলেন, ‘যেদিন পদ্মার বুকে প্রথম স্প্যান বসেছিল, সেদিন সেটার সাক্ষী হয়েছিলাম। সেদিন খুবই আশাবাদী ছিলাম আমরা পারব, বিজয় আমাদের হবেই। আজ শেষ স্প্যান বসেছে, দুই প্রান্ত যুক্ত হয়েছে। বিজয়ের মাসে এমন স্বপ্ন বিজয় হবে ভাবতে পারিনি।’
আরও খবর পেতে দেখুনঃ কর্পোরেট সংবাদ – বিনোদন সারাদিন
Padma Bridge News, Padma Bridge News