জাতীয় নির্বাচনের পর ঢাকা সিটি নির্বাচনেও ভোট জালিয়াতি ও ডাকাতির অভিযোগ তোলা বিএনপি উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে দোটানায় রয়েছে। দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বর্তমান সংসদের শূন্য হওয়া ৫টি আসনের উপনির্বাচন নিয়ে সময় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
বুধবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। স্থায়ী কমিটির নেতাদের একটি অংশ উপনির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। কয়েকজন সদস্য উপনির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন। ফলে উপনির্বাচন দলীয় প্রার্থী দেয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
যারা উপনির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে তাদের যুক্তি হচ্ছে– ফল যাই হোক, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় সেটি বিশ্ববাসী দেখুক। আর যেহেতু বিএনপি নির্বাচনমুখী দল, তাই উপনির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়া ঠিক হবে না।
যারা উপনির্বাচনে যাওয়ার বিপক্ষে তাদের মত হচ্ছে– উপনির্বাচনে যাওয়ার মধ্য দিয়ে আবারও একাদশ নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া হবে। এই সংসদে বিএনপির সাত এমপি শপথ নিয়ে যে ভুল করেছে, তার পুনরাবৃত্তি হবে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে। এ ছাড়া নির্বাচন করে তো লাভ হচ্ছে না। উল্টো হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন নেতাকর্মীরা। তা হলে এই প্রহসনের অংশী হওয়ার দরকার কী? এই প্রশ্ন উপনির্বাচন বিরোধীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, দুই সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে এই সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সবাই একমত। কেউ কেউ মনে করেন নির্বাচনে যাওয়া মানেই টাকা নষ্ট এবং নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া।
স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতা মনে করেন বিএনপি বিপ্লবী পার্টি নয়। ফলে গণতান্ত্রিক দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়া উচিত। কারণ গণতন্ত্রে ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচন। নেতাদের দুই রকম মতামতের কারণে উপনির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছে।
প্রসঙ্গত বর্তমান সংসদের ঢাকা-১০, বাগেরহাট-৪, বগুড়া-১, গাইবান্ধা-৩ ও যশোর-৬ আসন খালি রয়েছে। এসব আসনে উপনির্বাচন হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
politics news, politics news