সংসদে আজহারীর সমালোচকদের তুলাধোনা করলেন বগুড়ার এমপি
জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীকে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন বগুড়া-৭ আসনের স্বতন্ত্র এমপি রেজাউল করিম বাবলু।
কোরআন-হাদিসের কথা বলায় যারা আজহারীর বিরুদ্ধে কথা বলেন তাদের কড়া সমালোচনা করেন এই সংসদ সদস্য।
এমপি বাবলু বলেন, যারা মিজানুর রহমান আজহারীর সমালোচনা করে, তারাই ফিল্ডে গিয়ে টিনএজ ছেলেমেয়েদের নিয়ে বুক ফাইট্যা যায় গান করে তাদের উত্ত্যক্ত করে। তাদের উচ্ছৃঙ্খল করে।
তিনি বলেন, পাঙ্খাওয়ালিরা গিয়ে পাঙ্খার গান গায়। বুক ফাইট্টা যায়- এসব গান গেয়ে যখন যুবসমাজকে ধ্বংস করে, তখন আমরা কিছু বলি না, মাননীয় স্পিকার।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদে দেয়া এক বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ইতিমধ্যে তার বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বাবলু বলেন, মূলত ধর্ষণ, খুন, রাহাজানি– এই নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয়ের কারণ তালাশ করতে হবে।
‘আমার দৃষ্টিতে যতক্ষণ পর্যন্ত জাতির মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টি না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি বন্ধ হবে না, কমবে না।’
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি কয়েক দিন হলো আমাদের একজন ইসলামি বক্তা আজহারীকে নিয়ে কথা উঠছে। আজহারী কী রাজনীতি জানেন, তার বয়স কত। নট লেস দেন টুয়েন্টি ফাইভ ইয়ারস। সে কী রাজনীতি বোঝে, আজহারী কী রাজনীতি বোঝে যে, তাকে নিয়ে আমরা বড় বড় লোকগুলো টানাটানি করি। তাকে আরও ওপরের দিকে তুলে দিই।
এমপি বাবলু বলেন, কয়েকটা কোরআনের আয়াত নিয়ে কথা বলেন। তার পেছনে আমরা সবাই লেগেছি। মাননীয় স্পিকার, এটি আজহারীর সঙ্গে লাগা নয়, এটি করে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা হয়েছে।
কিছু বিদেশি গোয়েন্দা, বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি আমাদের এই ৯৫ শতাংশ মুসলিম দেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ন করছে বলে মনে করেন এই সংসদ সদস্য।
তিনি বলেন, মাননীয় স্পিকার, আমরা এই জাতীয় সংসদের অনেক সময় অবান্তর কথা বলে থাকি। কেউ সহনীয় পর্যায়ে ঘুষ খেতে বলি, কেউ গ্রিল ধরে ১০ তলা ভবন ফেলে দেয়।
‘এই মুজিববর্ষে, ৫০ বছর পরও আমরা রাজাকার আর মুক্তিযোদ্ধার তালিকার ফয়সালা করতে পারিনি। সেখানে কে দুই-একটা কথা বলেন, কোরআনের আয়াত বলেন, হাদিস বলেন– আর আমরা ওঠেপড়ে লেগেছি তার পেছনে।’
বাবলু আরও বলেন, যারা ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে অতিউৎসাহী হয়ে, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে, তাদের চিহ্নিত করা হোক। আজ তারা এ বিষয়ে এত অতিউৎসাহী কেন?
প্রসঙ্গত চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সব তাফসির কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন মিজানুর রহমান আজহারী। এ সময়ে গবেষণার কাজে তিনি মালয়েশিয়ায় চলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
আজহারীর মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর তাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
আজহারী এরইমধ্যে মালয়েশিয়া চলে গেছেন বলেও কুমিল্লায় আজহারির পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।
হঠাৎ করে মালয়েশিয়ায় চলে যাওয়ার কারণ কী- এ প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব পাওয়া না গেলেও ফেসবুকে আজহারি নিজে ‘পারিপর্শ্বিক কিছু কারণের’ কথা উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু সেই কারণগুলো কী তা উল্লেখ করেন নি তিনি। শুধু এটুকুই বলেছেন, রিসার্চ বা গবেষণার কাজে তিনি মালয়েশিয়া যাচ্ছেন এবং মার্চ মাস পর্যন্ত তার মাহফিল করা বন্ধ থাকবে।
তবে আজহারির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেছেন, সবশেষ দুটি সাক্ষাতের সময় আজহারি তার কাছে মাহফিল করতে বিভিন্ন জায়গায় বাধার সম্মুখীন হবার কথা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
বিবিসির এই প্রতিবেদনের পর ‘আজহারীকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর।
আরও খবর পেতেঃ ধর্ম ও জীবন – আন্তর্জাতিক
positive news daily, positive news daily