তরুণরা পরিবর্তনের রূপকার
বৃহৎ পরিসরে এসডিজি অর্জনের জন্য তরুণদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়ে ইউএসএইড বাংলাদেশ মিশনের পরিচালক ডেরিক এস ব্রাউন বলেছেন, তরুণরা পরিবর্তনের রূপকার, তারা বিভিন্নভাবে সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ‘ইয়ূথ এন্ডিং হাঙ্গার বাংলাদেশের উদ্যোগে সপ্তদশ জাতীয় যুব সম্মেলনে তিনি এমন কথা বলেন। এলজিডি অডিটরিয়ামে (আগাঁরগাও, ঢাকা) এ সম্মেলনে সারাদেশ থেকে এক হাজারের বেশি তরুণ-তরুণী অংশ নেন।
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাব্রতী সংস্থা দি হাঙ্গার প্রজেক্টের অনুপ্রেরণায় সৃষ্ট ইয়ূথ এন্ডিং হাঙ্গার ছাত্র-তরুণদের একটি সংগঠন। সংগঠনটি ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পার করেছে, প্রশিক্ষণ দিয়েছে লক্ষাধিক তরুণ-তরুণীকে। প্রশিক্ষিত এই তরুণরা তৃণমূলে নানা সামাজিক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য দেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, দি হাঙ্গার প্রজেক্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. বদিউল আলম মজুমদার, ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর শাহনাজ করিম।
অনুষ্ঠানে ডেরিক ব্রাউন বলেন, বাংলাদেশ অসাধারণভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। এই প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখার জন্য একইসঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, তরুণরা অদম্য, সৃজনশীল, উৎপাদনশীল। পরনির্ভরশীলতার মানসিকতা দ্বারা তারা আক্রান্ত নয়। দেশে তরুণদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বাংলাদেশের সামনে এক অপূর্ব সম্ভাবনা কাজ করছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। আমি মনে করি, দেশের অগ্রযাত্রায় তরুণদের কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশকে রুখবে কে? তরুণদের সম্পৃক্ত করেই আমরা একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়তে চাই।
উপস্থিত তরুণদের উদ্দেশ্যে সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, ভবিষ্যতের নয়, আমি আপনাদের বর্তমানের নেতা হিসেবে দেখতে চাই। শুধু প্রবৃদ্ধি অর্জনই এসডিজি অর্জনের জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ, সহানুভূতি, সংহতি এবং সম্প্রীতি ছাড়া টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে না। আমাদের অনেক বেশি বিজ্ঞানি এবং ডক্টর দরকার। কিন্তু একইসঙ্গে আমাদের অনেক বেশি ভালো মানুষ দরকার। আপনারা জানেন, এসডিজিতে মানসম্মত শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। এর কারণ হলো মানসম্মত শিক্ষা মানুষকে ভালোবাসতে শেখায়।
এসডিজি সম্পর্কে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দান-অনুদানের পরিবর্তে এসডিজিতে উন্নয়নকে অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসডিজির মূল প্রতিপাদ্যই হলো কাউকে পেছনে রাখা যাবে না। এসডিজির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো মানসম্মত শিক্ষা। কারণ, মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমেই কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা যায়। উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য একইসঙ্গে নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দরকার।
আসিফ সালেহ বলেন, এখন তরুণদের সময়। সারা পৃথিবীতেই আজ তরুণ নেতৃত্ব পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমাদের দেশে এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড রয়েছে। ২০৩৩ সালে এটা শেষ হয়ে যাবে। তাই এই সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে, তরুণদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে হবে।
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজকের পৃথিবীর অর্থনীতি নলেজ ইকোনমিতে পরিণত হয়েছে। তাই নিজের উদ্যোগে প্রতিনিয়ত শিখতে হবে। নানান বাধা আসবে, কিন্তু হার মানা যাবে না। ব্যর্থতা আসবে, কিন্তু ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আরেকটি বিষয় হলো- ভালো কাজে নতুনদের যুক্ত করতে হবে, অর্থাৎ দল বাড়াতে হবে।
আরও খবর পেতেঃ ভাইরাল নিউজ – কর্পোরেট নিউজ
prothom alo, prothom alo