অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করবো না: জাফর ইকবাল
শাবি, ২৭ সেপ্টেম্বর (ইউএনবি)- ‘আমি এই প্রতিষ্ঠান থেকে অবসর গ্রহণের পর বাংলাদেশের আর অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করবো না বলে ঠিক করে রেখেছি, কারণ আমি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক’ , এমনটাই বলেছেন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক এবং লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
তিনি বলেন, ‘আমার অবসর গ্রহণের কথা শুনে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে তাদের প্রতিষ্ঠানে যোগদানের জন্য ডাকছে। কিন্তু আমি সেখানে যাবো না। কারণ যে শক্তিটা আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) পরিচয়ে পাই, অন্য কোথাও যোগদান করলে আমার এই শক্তি থাকবে না।’
বৃহস্পতিবার সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হক এর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের ২৫ (পঁচিশ) বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘সাস্ট সায়েন্স অ্যারেনা’ কর্তৃক আয়োজিত স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে খুবই সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছি, আর যখন চলে যাচ্ছি তখন সুন্দর স্মৃতি নিয়ে যাচ্ছি। পৃথিবীর খুব কম মানুষ আছে যারা এমন সুন্দর স্মৃতি নিয়ে একটা জায়গা থেকে যায়। আমি যদি বিদেশে থাকতাম তাহলে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মরে যেতাম। আমি কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে দেশে ফিরে আসি নাই। এদেশের বৃষ্টি অনেক সুন্দর, ঝমঝম করে বৃষ্টির শব্দ, বৃষ্টির সাথে ব্যাঙ ডাকার শব্দ পৃথিবীর আর অন্য কোথাও পাওয়া অসম্ভব। এইসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে।’
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি আমাদের চোখে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি স্মৃতি আছে। আমাকে কেউ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছু বললে আমি বলবো অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বড় স্মৃতি সেক্রিফাইস, অনেক বড় বীরত্ব, অনেক বড় অর্জন। পুরো মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে একটি স্বজন হারানো বেদনা রয়েছে যা এখনকার জনসাধারণ সহজে বুঝবে না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
অবসর সময়কালে নৌকায় বাস করার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে অধ্যাপক জাফর ইকবালের বক্তব্যের সাথে ড. ইয়াসমিন হক বলেন, জাফর ইকবালের পরিকল্পনা শিক্ষকতা পেশায় অবসরের পর বড় একটি নৌকা বানাবেন তিনি আর সেখানেই বাস করার ইচ্ছা তাদের। তবে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আয়োজন করা যেকোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন এই শিক্ষক দম্পতি বলে জানান তারা।