অবশেষে ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন ডিসি অফিসের আনোয়ার!
শেষ পর্যন্ত ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক আনোয়ার হোসেন। অবশ্য ঘুষের অভিযোগে তাকে জেলার খোকসা উপজেলায় শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। এই কর্মচারী দীর্ঘদিন কুষ্টিয়াতে চাকরি করার সুবাদে নিজ নামে ও বেনামে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়।
জানা গেছে, কুষ্টিয়া সুগার মিলের কর্মকর্তা সেতাফুর রহমান তার নিজ নামে একটি বন্দুকের লাইসেন্স করেন। কিছুদিন পূর্বে তিনি মারা গেলে পরিবারের সব সদস্য একমত হয়ে সেতাফুর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান এলেনের নামে বন্দুকের লাইসেন্স হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেন। এলেন সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে হাজির হন অস্ত্র লাইসেন্স নবায়ন করার দায়িত্বে থাকা অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক আনোয়ার হোসেনের কাছে। এ কাজের জন্য আনোয়ার হোসেন এলেন তার কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করেন।
ঘুষের টাকা না দেওয়ায় কাজ না করে এলেনকে ঘুরাতে থাকেন দিনের পর দিন। ঘুষ ছাড়া কাজ হবে না বিষয়টি স্পষ্ট জানিয়ে দেন আনোয়ার। পরে এলেন বাধ্য হয়ে আনোয়ার হোসেনকে ৯০ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করেন। ফাইলের কিছু কাজ এগিয়ে এলেনের কাছে আরও ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন আনোয়ার। এলেন আর কোনো টাকা দিতে পারবে না জানালে তার আবেদন ফাইলবন্দি করে রেখে দেন আনোয়ার। সূত্র জানায়, ঘুষের ৯০ হাজার টাকার মধ্যে আনোয়ার জেলা প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ৫০ হাজার দিয়েছিলেন। এদিকে গত বুধবার বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে আনোয়ার হোসেনকে তাৎক্ষণিক খোকসাতে বদলি করা হয় এবং ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে আনোয়ার গত বৃহস্পতিবার এলেনকে ঘুষের ৯০ হাজার টাকা ফেরত দেন।
ঘুষের টাকা নেওয়া ও ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে স্বীকার করে আনোয়ার হোসেন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে টাকা ফেরত দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ওই টাকা থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকা তার দফতরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দিয়েছিলেন। ভুক্তভোগী এলেন জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আনোয়ার হোসেন আমাকে তার ভাইয়ের কুষ্টিয়া ইসলামী ব্যাংকের হিসাবের মাধ্যমে ঘুষের ৯০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ গড়ে তোলা আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা ও অভিযোগ রয়েছে। এদিকে আনোয়ার খোকসায় বদলি হলেও তিনি কুষ্টিয়ায় থাকার জন্য জোর তদবির শুরু করেছেন।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান জানান, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে আনোয়ার হোসেনকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। জেলা প্রতিনিধি/ বিডি প্রতিদিন