Lead Newsশিল্প ও বাণিজ্য

অর্ডার ফিরছে গার্মেন্টসে, শ্রমিকদের চাকরি পুনর্বহাল অনিশ্চিত

স্থবিরতা কাটতে শুরু করেছে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত তৈরী পোশাক শিল্পে। স্থগিত হওয়া রপ্তানি আদেশগুলো নতুন করে চালু করছেন ক্রেতারা। ইতোমধ্যেই প্রায় ৮০ ভাগ অর্ডার ফিরেছে বলে জানা গিয়েছে।

বিজিএমইএ সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে বাতিল হওয়া রপ্তানি আদেশের ৮০ শতাংশই ফিরেছে। কারখানা মালিকদের এই সংগঠনের সভাপতি ড. রুবানা হকও সম্প্রতি স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

কিন্তু, ক্রয়াদেশ ফিরলেও ক্রেতারা অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। অনেক ক্ষেত্রেই ছয় মাস কিংবা এক বছরের মতো লম্বা সময় নিচ্ছেন তারা। আবার কেউ কেউ দামে ছাড় দিতে বাধ্য করছেন।

বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মশিউল আজম সজল বলেন, ‘আমরা এখনো বলতে পারছি না যে আসলে পরিস্থিতি কোনো দিকে যাচ্ছে৷ তবে কিছুটা ইতিবাচক হলো আমাদের কাছে যে কাপড়গুলো রেডি ছিলো সেগুলো এখন তারা নিচ্ছে৷ খুব যে বেশি নতুন অর্ডার আসছে তা নয়৷ ফলে সামনের সময়ে অর্ডার কেমন আসে সেটা দেখতে হবে।’

বৈশ্বিক মহামারী পরিস্থিতিতে চুক্তির শর্ত দেখিয়ে চলতি বছর একের পর এক রপ্তানি আদেশ স্থগিত করে ক্রেতারা। বিজিএমইএর হিসাবে, তিন শতাধিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা রপ্তানি আদেশ স্থগিত হয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে রপ্তানিকারকদের পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দেয় সরকার। তারপরও বহু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। চাকরি হারিয়েছেন বহু শ্রমিক।

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের হিসাব অনুযায়ী করোনার পরিস্থিতে ১ লাখ ১০ হাজার শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। বহু শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করেননি মালিকরা। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে কেউ কেউ পাওনা পেলেও অনেককেই এখনো পাওনার জন্য লড়ে যেতে হচ্ছে। তবে শুধু যে চাকরি হারিয়েছে, বিষয়টা এমন নয়। আবার নতুন চাকরিও পেয়েছেন অনেকে। আসলে মালিকরা দীর্ঘদিনের পুরাতন শ্রমিককে বাদ দিয়ে নতুন শ্রমিক নিচ্ছেন। কারণ একজন শ্রমিক দীর্ঘদিন এক প্রতিষ্ঠানে থাকলে তার বেতন বেড়ে যায়। আর নতুন শ্রমিক নিলে তার বেতনও কম, পাওনাও থাকে না। করোনা পরিস্থিতিতে এই সুযোগটাই নিয়েছেন গার্মেন্টস মালিকরা। যার ফলে, প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক এখনো বেকার।’

বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ শ্রমিক বেতন বেশি পেলেও তার প্রোডাকশনও বেশি। অভিজ্ঞ শ্রমিক ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। আর ৪০ লাখ শ্রমিক যে সেক্টরে কাজ করে সেখানে ১৫-২০ হাজার শ্রমিক বেকার থাকা এমন বড় বিষয় না। বড় কথা হলো, প্রতিষ্ঠান না বাঁচলে কিভাবে শ্রমিক বাঁচবে? এখন ৬০-৭০ ভাগ অর্ডার দিয়ে কতদিন শতভাগ শ্রমিকের বেতন দেওয়া যাবে? তাছাড়া এই সময়ে সামনের গ্রীষ্মের ক্রয়াদেশ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু সেই আলোচনা তেমন হচ্ছে না। এটি আমাদের জন্য অবশ্যই উদ্বেগের।’

সূত্র : ডয়চে ভেলে

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − fourteen =

Back to top button