অস্ট্রিয়াতেও শিথিল হলো লকডাউন
অস্ট্রিয়ায় করোনাভাইরাসের প্রকোপের মাত্রা আশেপাশের অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা কম। গত চার মাসে দেশটিতে আক্রান্ত হন ১৫ হাজার ৪৫০ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৯০৭ জন। মারা গেছেন মাত্র ৫৮৪ জন। ২ হাজার ৫৪৩ জন এখনো অসুস্থ, তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অস্ট্রিয়ায় করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই দেশটি লকডাউন করে সরকার। বিশেষ করে রাজধানী ভিয়েনাতে বেশ জোরেশোরেই লকডাউন শুরু হয়। তবে দীর্ঘদিনের বন্দিদশার কারণে দেশটিতে অর্থনৈতিক চাঁকা কিছুটা পিছলে গেছে। সে দিকে লক্ষ্য রেখে দেশটির সরকার করোনা পরিস্থিতিতেও লকডাউন শিথিল করছে।
আজ শুক্রবার থেকে অস্ট্রিয়ায় জনসাধারণকে ঘর থেকে বের হতে স্বাধীনতা দিয়েছে সরকার। তবে বেশ কিছু নিয়ম বেধে দেওয়া হয়েছে। নিয়মগুলো দেশি-বিদেশি প্রত্যেক নাগরিককে যথাযথভাবে পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে নিয়মের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ব্যক্তিকে কমপক্ষে এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করতে হবে। গণপরিবহন এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক। যেকোনো অনুষ্ঠানে একসঙ্গে ১০ জনের বেশি মানুষ থাকতে পারবে না। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ ৩০ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন।
লকডাউন শিথিল হচ্ছে যেসব ক্ষেত্রে
আগামীকাল শনিবার থেকে সেলুন এবং বিউটি পার্লার খুলে দেওয়া হচ্ছে। ৪ মে থেকে খুলবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো, তবে কিন্ডারগার্টেনগুলো খুলবে ১৫ মে। আগামী ৯ মে থেকে খুলবে দেশটির শপিং মল। ১৫ মে থেকে রেস্টুরেন্টগুলো তাদের ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারবে। এ ছাড়া চিড়িয়াখানা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও একই দিন থেকে চালু হবে। পর্যটন সেবায় পরিচালিত হোটেলগুলো ২৯ মে থেকে চালু হবে। অন্যান্য ক্ষেত্র সম্পর্কে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।
সেখানে কেমন আছেন বাংলাদেশিরা
করোনাভাইরাসে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীরা আক্রান্ত হয়েছেন। মারাও গেছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক। তবে অস্ট্রিয়ায় পরিস্থিতি ভিন্ন। দেশটিতে কোনো বাংলাদেশি আক্রান্ত হননি। কেউ মারা গেছেন বলেও খবর পাওয়া যায়নি।
কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লকডাউনের শুরুর দিন থেকে তারা সরকারের নির্ধারিত নিয়ম পালন করেছেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তারা বাইরে বের হননি। তারপরও যে কয়জন বাইরে বেরিয়েছেন, তারা খোলা পার্কে বা উন্মুক্ত স্থানে বেড়িয়েছেন। তবে মাস্ক, গ্লোভস ও সুরক্ষা পোশাক ব্যবহার করেছেন তারা।
অস্ট্রিায় বাংলাদেশ দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান রাহাত বিন জামান দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘দেশটিতে বাংলাদেশি প্রবাসী সংখ্যা কম। তবে করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে আমাদের দেশের লোকজন নিয়ম মেনেছে।’
রাহাত বিন জামান বলেন, ‘দেশটিতে কোনো বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। দূতাবাস থেকে নির্দেশনা দেওয়া ছিল, কেউ এ পরিস্থিতিতে কোনো সমস্যায় পড়লেই যেন যোগাযোগ করে। তবে কেউ এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করেননি।’