‘আইভার ম্যাকটিনে’ সুস্থ হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা
করোনা সংক্রমণ রোধে জনগণের মধ্যে সর্তকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সুস্থতার হার অন্যদের তুলনায় বেশি।
পুলিশে রোববার (৩১ মে) পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৮৬৮ জন। এখন পর্যন্ত করোনামুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮০১ জন পুলিশ সদস্য।
পুলিশ সদর দফতরের হিসাব বলছে, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৩৯ দশমিক ৪০ শতাংশ পুলিশ সদস্যই সুস্থ হয়ে গেছেন। এছাড়া আগের তুলনায় পুলিশে সংক্রমণের সংখ্যাও কমে গেছে।
আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য সর্বোত্তম সেবা ও শুশ্রূষা নিশ্চিত করতে বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করাসহ সকল পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সংযোজন করায় সুস্থতার সংখ্যা বেড়েছে বলে দাবি বাহিনীটির।
তবে পুলিশ সদস্যদের কি ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. খালেদ মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনার চিকিৎসার জন্য স্বীকৃত কোনো ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে না। একেক দেশ একেক পদ্ধতি অনুসরণ করছে। আমরা শুরু থেকেই অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটির বায়োমেডিসিন ডিসকভারি ইনস্টিটিউটের একটি গবেষণা ফলো করছি। তারা সেখানে ‘আইভার ম্যাকটিন’ জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করার কথা বলেছেন। এটি সাধারণত উকুননাশক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাই এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই ওই অর্থে।
পুলিশ হাসপাতালের এই ডাক্তার বলেন, হাসপাতালের পরিচালকের অনুমতি সাপেক্ষে ওষুধটি প্রয়োগ করা শুরু করি। শুরু থেকেই বেশ ভালো ফল পাই। পুলিশে সুস্থ হওয়া অধিকাংশ সদস্যকেই প্রায় ওষুধটা সেবন করানো হয়েছে।
পরবর্তীতে আমার পরীক্ষা ছাড়া উপসর্গ আছে এমন পুলিশ সদস্যদের ক্ষেত্রেও ওষুধটি প্রয়োগ করি। সেখান থেকেও ভালো ফল পাই।
এদিকে সদ্য করোনা আক্রান্ত হয়ে চারদিনেই দ্বিতীয় টেস্টে করোনা নেগেটিভ আসা অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মিশু বিশ্বাস বলেন, আমার টেস্টে পজিটিভ আসার দ্বিতীয় দিনেই আমি ‘আইভার ম্যাকটিন’ গ্রুপের স্ক্যাবো-৬ নিয়েছি। মূলত পুলিশ হাসপাতাল থেকেই আমাকে পরামর্শ দেওয়া হয় ওষুধটি নিতে। ৫ দিনের মাথায় দ্বিতীয় টেস্টে আমার নেগেটিভ এসেছে। তৃতীয় টেস্টের অপেক্ষায় আছি।
পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. খালেদ মোহাম্মদ ইকবাল আরও বলেন, ভালো ফল পাওয়ায় আমরা সাধারণ জ্বরের এরিথ্রোমাইসিনের পাশাপাশি ৩০ হাজার আইভার ম্যাকটিন সংগ্রহ করেছি।
জানতে চাইলে পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের প্রতি ৩ জনের একজন সদস্য ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়েছেন। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের উন্নত ও মানসম্মত চিকিৎসা সেবায় সুস্থতার হার দ্রুত বাড়ছে।