আজও ধর্ষণের প্রতিবাদে রাজধানীতে দিনভর বিক্ষোভ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের এক নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণচেষ্টার খবর রবিবার (৪ অক্টোবর) রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। এর পরদিন আজ সোমবার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদের রেশ দেখা যায় রাজধানীতেও। এদিন জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত দিনব্যাপী দফায়-দফায় কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়ও বিক্ষোভ করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, মিরপুর ও উত্তরায়ও পৃথক-পৃথক সময়ে ধর্ষণের প্রতিবাদ করেছে কয়েকটি সংগঠন।
দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান গ্রহণ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এবং ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলমান এই বিক্ষোভে শতাধিক শিক্ষার্থী ও সংগঠনের কর্মীরা অংশগ্রহণ করে। সেখানে অবস্থানকারীরা ধর্ষণ বিরোধী স্লোগান দেয়। এসময় উপস্থিত তরুণ-তরুণীদের হাতে প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুনও দেখা যায়। বিক্ষোভকালে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, ‘সারাদেশে একের পর এক ধর্ষণ ঘটেই চলেছে। সম্প্রতি সিলেটের এমসি কলেজ এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ভয়ঙ্কর নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতির জন্যই এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে’।
শাহবাগে যখন শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভরত, একইসঙ্গে পাটকল খুলে দেওয়ার দাবিতে মিছিল করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। শাহবাগ মোড় পেরিয়ে মিছিলটি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের কাছাকাছি এসেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার মুখে পড়ে। সেখানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় কর্মীদের। এরপর বামজোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিসহ অনেকে কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকাল চারটার দিকে পুলিশের অনুরোধে প্রতিটি পথে সীমিত আকারে যান চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। বিকেল ৪টার শাহবাগ থেকে টিএসসি চত্বর পর্যন্ত লাঠি মিছিলের মধ্য দিয়ে তাদের অবস্থান কর্মসূচি শেষ হয় ।
শাহবাগের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, জাতীয় জাদুঘরের সামনেও বিক্ষোভ হয়। সকালে ধর্ষণের প্রতিবাদ ও বেগমগঞ্জে এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করার প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। এতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারাও অংশগ্রহণ করেন। জাদুঘরের সামনে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে ছাত্র অধিকার পরিষদ দুপুর ১২ টায় বিক্ষোভ করেন। সকাল ১১টায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ছাত্র ফোরামের সদস্যরা।
মানববন্ধনে এসে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও খেলাফত মজলিসের প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল জলিল বলেছেন, ‘সারাদেশে ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতন চরম আকার ধারণ করেছে। ধর্ষণের সাথে জড়িতদের প্রকাশ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সরকারী দলের ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নামধারী সন্ত্রাসীরা সারাদেশে ধর্ষণের রাজত্ব কায়েম করেছে। নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের কলঙ্ক মোচনের জন্য ধর্ষণকারী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’