ক্রিকেটখেলাধুলা

আফিফ, মোসাদ্দেকের ব্যাটে টাইগারদের রোমাঞ্চকর জয়

শেষ পর্যন্ত জয়ের ধারায় ফিরলো টাইগাররা। সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় দিয়েই ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজ শুরু করলো টাইগাররা। শুক্রবার মিরপুরে আফিফের ব্যাটিং তাণ্ডবে জিম্বাবুয়েকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে সাকিববাহিনী।
জিম্বাবুয়ের দেয়া ১৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে ১৪৮ রান তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
অবশ্য নিজেদের মাঠে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯.৩ ওভারে টপঅর্ডারের ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে স্বাগতিকরা। দলের বিপদে মোসাদ্দেক হোসেনর সাথে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই মিরপুরে উইকেটে ঝড় তোলেন আফিফ হোসেন।
মাত্র ২৪ বলে ৮ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন এই তরুণ ক্রিকেটার। সেই সাথে মোসাদ্দেক হোসেনের সাথে ৮২ রানের শক্ত জুটি গড়েন।
অসাধরণ ব্যাট করে ২৬ বলে ৫২ রানের ঝড়ো ইনিংস উহার দিয়ে শেষ মুহূর্তে বিদায় নেন আফিফ। তবে মোসাদ্দেক হোসেন সাথে ব্যাটিংয়ে নেমে শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন সাইফউদ্দিন।
মোসাদ্দেক হোসেন ২৪ বলে দুই ছক্কায় ৩০ রান করে অপরাজিত থাকেন। এছাড়া সাইফউদ্দিন ২ বলে ৬ রানে করে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলেই বিদায় নেন ওপেনার লিটন কুমার দাস। টেন্দাই চাতারার বলে ব্যক্তিগত ১৯ রান করে সরাসরি বোল্ড হন তিনি।
এরপর সৌম্য সরকার ৪, মুশফিকুর রহিম শুন্য, সাকিব আল হাসান ১ রান করে বিদায় নেন। ৪.৩ ওভারে চার উইকেট হারায় তারা। এরপর অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৪ ও সাব্বির রহমান ১৫ রান করে বিদায় নেয়।
শুক্রবার মিরপুরে ১৮ ওভারের খেলায় টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ১৪৪ রান তোলে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার দলটি। শেষ মহুর্তে জিম্বাবুয়ের হয়ে ঝড়ো হাফসেঞ্চুরি করেন রায়ান বুর্ল।
আর অভিষেকে নিজের প্রথম বলেই উইকেট শিকার করেন তাইজুল। বাঁহাতি এই স্পিনার ফিরিয়ে দেন ওপেনার ব্রেন্ডন টেইলরকে। কাটারা মাস্টার মুস্তাফিজুর বোলিংয়ে এসেই জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হানেন। ক্রেইগ আরভিনকে ফিরিয়ে দিয়েছেন বাঁহাতি এই পেসার।
মুস্তাফিজের বল পুল করে ছক্কায় ওড়াতে চেয়েছিলেন আরভিন। টাইমিং করতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ মুঠোয় জমান মোসাদ্দেক হোসেন। ভাঙে ৪৪ রানের জুটি।
দলীয় ৫১ রানে ব্যক্তিগত ১১ রান করে বিদায় নেন তিনি। মুস্তাফিজের পর জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ তারকা ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক মাকাদজাকে বিদায় করেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।
তার বলে জায়গা করে নিয়ে মিড অফের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন মাসাকাদজা। শরীরের খুব কাছের বলে টাইমিং করতে পারেননি এই ওপেনার। কিছুটা এগিয়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ মুঠোয় জমান সাব্বির। ২৬ বলে পাঁচ বাউন্ডিারি ও এক ছক্কায় ৩৪ রান করেন মাসাকাদজা। ৮ ওভারে জিম্বাবুয়ের দলীয় স্কোর তখন ৩ উইকেটে ৫৬।
এবার ক্রিজে শন উইলিয়ামসের সঙ্গী টিমিসেন মারুমা। তখনই আক্রমণে এসে প্রথম বলেই উইকেট পেলেন মোসাদ্দেক হোসেন। ফিরিয়ে দিলেন শন উইলিয়ামসকে। মারবেন নাকি ঠেকাবেন এনিয়ে যেন দ্বিধায় পড়েছিলেন উইলিয়ামস। দ্বিধা নিয়ে খেলতে গিয়ে কোনোটাই করতে পারলেন না। বল তোলে দিলেন অফ স্পিনার মোসাদ্দেকের হাতে। ৩ বলে ২ রান করে ফিরেন উইলিয়ামস। ৯ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৫৯/৪।
ক্রিজে টিমিসেন মারুমার সঙ্গী রায়ান বুর্ল। সতীর্থকে সাথে নিয়ে শুরুর আগেই রান আউটের শিকার মারুমা। ব্যক্তিগত ১ রান করে মুস্তাফিজের বলে সাকিবের অসাধারণ থ্রোতে রান আউট হন তিনি। কিন্তু এরপরই ব্যাটিংয়ে এসে ঝড় তোলেন রায়ান বুর্ল।
সাকিব আল হাসানের করা ১৬তম ওভারে ৩০ রান নেন তিনি। মাত্র ২৮ বলেই হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন এই ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত তিনি ৩২ বলে ৫ বাউন্ডারি ও চার ছক্কায় অপরাজিত ৫৭ রান করেন। এছাড়া তিনোতেন্দা মুতুমবদজি ২৬ বলে একটি করে চার ছক্কায় অপরাজিত ২৭ রান তোলেন।
বল হাতে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ৪ ওভারে ৪৯ রান দিয়ে কোন উইকেট পায়নি। তবে তাইজুল, মুস্তাফিজ, সাইফউদ্দিন ও মোসাদ্দেক একটি করে উইকেট শিকার করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × two =

Back to top button