আশ্রয়কেন্দ্রে ২৪ লাখ মানুষ : দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসায় ২৩ লাখ ৯০ হাজার ৩০৭ মানুষকে ১৪ হাজার ৬৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ মে) দুপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ মোকাবিলায় সরকারের সবশেষে প্রস্তুতি নিয়ে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য দেন।
পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৪৩২টি গবাদিপশুকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একটি লোককেও যেন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে ছেড়ে না আসা হয়, আমরা সেই নির্দেশ দিয়েছি।’
তবে, করোনাপরিস্থিতি মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া সেখানে পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আজ বুধবার বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এর আগে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এনডিআরসিসির দায়িত্বে থাকা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব কাজী তাসমীন আরা আজমিরী বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১৩ লাখ ৬৪ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। এটি সকালের তথ্য। উপকূলীয় এলাকার প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসছেন, একই সঙ্গে তারা সেই তথ্যটা আমাদের দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন,‘আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ আসার সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। মোট সংখ্যাটি আমরা হিসাব করার পর আরও পরে জানাতে পারব।’ এনডিআরসিসিতে দায়িত্ব পালনকারী এক কর্মী জানান, দুপুর পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মানুষের সংখ্যা ১৪ লাখ পার হয়ে গেছে।
সকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল বলেন, ‘লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে আসতেছে। ১০ লাখের বেশি লোক আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছে। ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা নাগাদ আমাদের উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে। এ বছর স্কুল, কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুালোকেও আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। এখন তো বাড়ির পাশেই স্কুল, বিকেল পর্যন্ত তো লোকজন আসতে থাকবেই। আমরা চাইছি ঝুঁকিপূর্ণ ২০ লাখের মতো মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে।’
তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরায় আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছে ৩ লাখ ৫৩ হাজার, পটুয়াখালীতে এসেছে ৩ লাখ ২৩ হাজার। খুলনা ও পটুয়াখালীর যে এলাকাগুলো বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেই এলাকাগুলোর আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বেশি লোক আসছে।’
‘আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে। খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করা আছে।’
আশ্রয় কেন্দ্র ১২ হাজার ৭৮টি থেকে বাড়িয়ে ১৩ হাজার ২১৫টি করা হয়েছে বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব।
শাহ কামাল বলেন, ‘আম্ফান’ যদি সন্ধ্যার মধ্যে উপকূল অতিক্রম শুরু করে তবে আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মানুষ হয়তো কাল সকাল থেকে বাড়ি ফিরতে পারবে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর বুধবার সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (বিজ্ঞপ্তি নম্বর-৩২) জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে।