ইঁদুরের আঁকা ছবি বিক্রি হলো হাজার পাউন্ডে!
ইঁদুর খুবই বিরক্তিকর নিরীহ প্রাণী। খাবার থেকে শুরু করে ফসল, কাপড়, বই-খাতা ইত্যাদি ঘরের অনেক কিছুই নষ্ট করে এই প্রাণীটি। অনেকেই ইঁদুরের যন্ত্রণায় অসহ্য হয়ে নানা উপায়ে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় খোঁজে। তবে জানলে অবাক হবে, এমন এক ইঁদুর রয়েছে যার আঁকা ছবি বিক্রি হয়েছে হাজার পাউন্ডে!
গুস শুধু একটি উদ্ভট ইঁদুরই নয়, সে এক চিত্রকর! হ্যাঁ, ভাবতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। তার পায়ে আঁকা ছবি বিক্রি হলো এক হাজার পাউন্ডে। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯২ হাজার টাকা। আর বাংলাদেশের টাকায় কত হতে পারে ভেবেই দেখুন!
ছোট্ট রডেন্ট তার পছন্দসই একটি জিনিস চিত্রিত করে নগদ অর্থ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ক্ষুদ্রতর মাস্টারপিস তৈরি করতে গুস তার পাঞ্জা ব্যবহার করে। এই কারণে বিখ্যাত হয়ে ওঠার পরে কোনো আর্টস রডেন্টের ডাকনাম ‘রাটিস’ হয়েছে। ১৯ বছর বয়সী জেস ইন্ডসেথের পোষা ইঁদুর গুস। গুসের শৈল্পিক স্বভাব তখনই জেসের নজরে আসে যখন সে তার আর্টস এবং কারুশিল্প সেট নিয়ে তাকে খেলতে দেয়।
দ্য সান পত্রিকার এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যায়, গুস ইঁদুরটি প্রথম তার শিল্পকর্মের দিকে আগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল। পড়ে স্বত্ত্বাধিকারী জেস তাকে তার শিল্পকলা ও কারুশিল্পের সেট-সহ দেয়। ম্যানচেস্টারে এই যুবক গুসের পাঞ্জাগুলোতে পেইন্টের সঙ্গে কিছু কাগজও দিয়েছিল। পরে এর ফলাফল দেখে সে আনন্দে হতবাক হয়ে যায়।
ছোট শিল্পীর দক্ষতা তাকে মুগ্ধ করে। পড়ে সে তার জন্য অবিষাক্ত পেইন্ট এবং মিনি ক্যানভাস কিনে আনে। যার উপর গুস তার যাদু কাজ সহজেই করতে পারে। জেসের আরো ৪টি ইঁদুর রয়েছে।
জেস গুসের এই আর্টস-এর কাজটি অন-লাইন মার্কেট এটসিতে বিক্রির জন্য পোস্ট করেন। তারপরই অপ্রত্যাশিত অর্ডার পান তিনি। দক্ষিণ কোরিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দূরবর্তী দেশগুলো থেকে ২০ কিলো ক্যানভাসের অর্ডার পান জেস।
ম্যাঞ্চেস্টারের ড্রয়লসডেনের একজন সাঁতার প্রশিক্ষক জেস বলেন, ‘গুস একটি মিনি ম্যাটিসের মতো। আমি ওর শিল্পকর্ম দেখে অবাক হয়েছিলাম। আমি এই ইঁদুরের কাজের জন্য একটি মার্কেটপ্লেস খুঁজে পেয়ে হতবাক হয়েছি। অবশ্যই এটি দুর্দান্ত বিষয়।’
গুসের একটি ভিডিওতে দেখা যায় তার কাজের ব্যস্ততা। প্রাণবন্ত শিল্পকর্ম তৈরি করতে ক্যানভ্যাসগুলোতে ঝাঁকুনি দিচ্ছে সে, আবার সেই মাস্টারপিসগুলোতে গর্বিতভাবে কিছুর সন্ধানও করছে সে।
জেস ২০১৮ সালে গুসকে একজন ব্রিডারের কাছ থেকে কিনে আনার পর দেখেন যে, তার অন্য পোষা প্রাণীর তুলনায় সে অনেক শান্ত মেজাজের। ফলে জেস তখনই এই রডেন্টের প্রেমে পড়ে যান। তিনি তাকে চেরিওসের সঙ্গে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। জেস তার পাঞ্জাগুলোকে পেইন্টে ডুবান এবং ছোট ক্যানভ্যাসগুলোতে গুস যেমন চান ঠিক তেমন চিত্র তৈরি করতে দেন।
জেস প্রথমে ইনস্টাগ্রামে তার কাজগুলো পোস্ট করেছিলেন। তবে লোকেরা যখন সেগুলো কিনতে চান, তখন তিনি প্রথমে নিশ্চিত হন এবং পরে তার দাম ঠিক করেন।