ইয়েমেনে সৌদি জোটের হামলায় ২১৮ জন হুথি বিদ্রোহী নিহত
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের মারিব শহরে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় ২১৮ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। রবিবার (৩১ অক্টোবর) জোট বাহিনী জানিয়েছে, হামলায় ২৪টি সামরিক যান ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
গেল ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মারিবে দুপক্ষের সংঘাত তীব্র রূপ নিয়েছে। গত ১১ অক্টোবর থেকে শহরটিতে সৌদি হামলায় প্রায় দুহাজার হুতি বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
সর্বশেষ মারিব থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে আল-জাওবা ও উত্তরপশ্চিমের আল-কাসসারায় বিমান হামলা চালায় সৌদি জোট। শহরটি দখলে ফেব্রুয়ারিতে বড় ধরনের অভিযান শুরু করেছে হুতিরা। এরপর কিছুটা শান্ত অবস্থা বিরাজ করলেও সেপ্টেম্বরে হামলা তীব্রতর হয়েছে।
শনিবার আদেন বিমানবন্দরের কাছে একটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে শিশুসহ ১২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর নতুন করে বিমান হামলা শুরু করে সৌদি বাহিনী।
এক কর্মকর্তা বলেন, একটি বিস্ফোরণে ১২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এছাড়াও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন বেশ কয়েজন।
ইয়েমেন সরকারের অংশ দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্তবর্তী কাউন্সিলের এক মুখপাত্র বলেন, একটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে মারিব প্রদেশের একটি মসজিদ ও ধর্মীয় স্কুলে হুতি বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নারী-শিশুসহ ২৯ জন হতাহত হয়েছেন। গভর্নরের অফিস জানিয়েছে, রবিবারের এই হামলায় দুটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হুতি ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে লড়াই তীব্র রূপ নিয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, মারিবে সেপ্টেম্বরের লড়াইয়ে ১০ হাজার লোক ঘরছাড়া হয়েছে।
ইয়েমেনের আন্তর্জাতিক সমর্থিত সরকারের সর্বশেষ ঘাঁটি মারিবের সংঘাতে মানবিক বিপর্যয় আরও চরম রূপ নিয়েছে। গেল মাস থেকে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিতে অভিযান শুরু করেছে হুতিরা।
সাত বছরের যুদ্ধে ইয়েমেনে মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। ২০১৪ সালে মারিবের ১২০ কিলোমিটার পশ্চিমে রাজধানী সানার নিয়ন্ত্রণ নেয় হুতিরা। এরপর থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বিমান হামলা শুরু করেছে। এতে হাজার হাজার ইয়েমেনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক লাখ। দেশটি এখন দুর্ভিক্ষের কিনারে গিয়ে ঠেকেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।