BreakingLead Newsদেশবাংলা

ঈদযাত্রাঃ প্রাইভেটকার-মাইক্রোতে ভাড়া নাগালের বাইরে

করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে সরকারি বিধিনিষেধের মধ্যে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার বাস। তবে ঈদযাত্রায় মানুষ ছুটছে আগের মতোই। বাস বন্ধ থাকায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়েই প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে যাত্রা করতে হচ্ছে বাড়ির পথে। এমন পরিস্থিতিতে সামর্থ্য না থাকায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। মাইক্রোবাসে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এক হাজার ৬০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা, লক্ষ্মীপুরে দেড় হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা, কুমিল্লায় ৮০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা ভাড়া দাবি করছেন প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস চালকরা।

যাত্রীরা বলছেন, বাস চলাচল না করার সুযোগে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছে প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসগুলো। আগে যেখানে ভাড়া ছিল ৩০০ টাকা, তা এখন বাড়িয়ে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা নিচ্ছেন চালকরা। ফলে সামর্থ্য না থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষদের।

লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, করোনার কারণে এমনিতেই কাজকর্ম নাই। তার মধ্যে বাড়ি যেতে এখন অনেক বেশি ভাড়া চাচ্ছে। অন্যান্য সময় বাসে লক্ষ্মীপুর যেতে ৩০০ টাকা নিলেও এখন মাইক্রোবাস চায় আড়াই হাজার টাকা। এতে টাকা দিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য তো নাই। সে জন্যই দাঁড়িয়ে আছি, যদি সাধ্যের মধ্যে গাড়ি পাই। তবে ভাড়ার পরিমাণটা ৩০০ টাকা থেকে এক হাজার হতে পারে সর্বোচ্চ। আড়াই হাজার টাকার চাওয়ার কোনো যুক্তি নাই।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. জামাল হোসেন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে যাবেন কুমিল্লার দাউদকান্দি। সকাল থেকে অপেক্ষা করেও গন্তব্য রওনা করতে পারেননি। তিনি বলেন, সায়েদাবাদে সকালে এসেছি। কোনো বাসা চলছে না, তবে মাইক্রোবাস আছে। কিন্তু মাইক্রোবাসের ভাড়া অনেক বেশি। মাইক্রোবাসে জনপ্রতি ভাড়া চাচ্ছে ৮০০ টাকা। এত টাকা দিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য না থাকলেও চেষ্টায় আছি বাড়িতে যাওয়ার, সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে ঈদ করার জন্যই এত কষ্ট করা।

মাইক্রোবাস চালকরা জানান, রাস্তায় গাড়ি ধরলেই টাকা দিয়ে ছাড়াতে হয়। সরকারি নিষেধাজ্ঞায় প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস চলাচল নিষেধ না থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে হয়রানি করা হয়। সে জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিতে হয়। সেই টাকা রাস্তায়ই চলে যায়।

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে দায়িত্বরত যাত্রাবাড়ী থানার এএসআই মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছাড়তে দিচ্ছি না। বাস ছাড়ার কোনো সুযোগ নেই। আর তাছাড়া রাস্তায় অনেক চেকপোস্ট আছে। দূরপাল্লার বাস চেষ্টা করলেও চলতে পারবে না। তবে মাইক্রোবাসের বিষয়ে সরকারি বিধিনিষেধ না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে আমরা সেভাবে বাধা দিচ্ছি না।

এদিকে দীর্ঘদিন গাড়ি বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন দূরপাল্লার বাসের চালক-সহকারীরা। ঢাকা-কুমিল্লায় চলাচল করা এশিয়া ট্রান্সপোর্টের গাড়িচালক মো. আব্দুল জলিল জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন গাড়ি চলছে না। আমরা খুবই অসহায় জীবনযাপন করছি। প্রতিদিনই টার্মিনালে আসছি, কিন্তু গাড়ি ছাড়তে পারছি না। ঈদের স্ত্রী-সন্তানদের কিছু কিনেও দিতে পারি নাই। বাসাভাড়া বাকি পড়ছে তিন মাসের। সবমিলে খুব অসহায় অবস্থায় আছি। সরকারের কাছে অনুরোধ দ্রুত যেন গাড়ি ছেড়ে দেয়া হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve + sixteen =

Back to top button