আন্তর্জাতিক

এরদোয়ানের ‘বার্তা’ নিয়ে আজারবাইজান সফরে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিরোধপূর্ণ নাগর্নো-কারাবাখের দখল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার চলমান যুদ্ধ এক মাস ছাড়িয়েছে, ক্রমান্বয়ে তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে আক্রমণ। দেশ দুটির মধ্যে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের তিন দফা যুদ্ধবিরতি ব্যর্থ হওয়ার পর হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে উভয় পক্ষ।

এমন প্রেক্ষাপটে আজ রোববার ঝটিকা সফরে আজারবাইজান গেছেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগ্লু। তিনি বলেন, প্রিয় আজারি ভাইদের প্রতি তুরস্কের জোরালো সমর্থনের কথা ঘোষণা করতে আমি বাকু এসেছি।

তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেছেন, এ সফরে নাগর্নো-কারাবাখের সর্বশেষ অবস্থা এবং সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হবে। আজারবাইজান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের আগে এর বেশি কিছু প্রকাশ করেননি তিনি।

সংশ্লিষ্টা বলছেন, কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার যুদ্ধ তীব্রতর হওয়ার পর নতুন দিকে মোড় নেয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আজারিরা বিরোধপূর্ণ এলাকায় আক্রমণ সীমাবদ্ধ রাখলেও আর্মেনীয় বাহিনী হামলা চালাচ্ছে আজারিদের মূল ভূখণ্ডের জনবহুল এলাকায়।

এতে একদিকে যেমন আজারবাইজানের বেসামরিক লোক হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে সম্প্রতি রুশ গণমাধ্যমগুলো দাবি করেছে, আর্মেনিয়ার আকাশ সীমায় বেশ কয়েকটি তুর্কি ড্রোন ভূপাতিত করেছে রাশিয়ার জ্যামিং সিস্টেম। এ যুদ্ধে তুর্কি ড্রোনকেই আজারি অগ্রযাত্রার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে।

এ জন্য তুর্কি মন্ত্রী হয়তো প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিনিধি হিসেবে নতুন কোনো ‘বার্তা’ বা ‘যুদ্ধ কৌশল’ নিয়ে বাকু সফরে গেছেন। অভিযোগ রয়েছে, কুর্দিদের সঙ্গে পরামর্শ করেই যুদ্ধ কৌশল নিয়ে থাকে আজারবাইজান। আর্মেনিয়া বলছে, এরদোয়ানের কারণেই এই যুদ্ধ থামানো যাচ্ছে না।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে শুরু হওয়া যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার মধ্যস্থাতায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান দুই দফা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও তা কার্যকর হয়নি। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ দুটিকে প্রথম দফায় গত ১০ অক্টোবর এবং দ্বিতীয় দফায় ১৭ অক্টোর সমঝোতায় আনার চেষ্টা করে মস্কো।

দেশ দুটির চলমান সংঘাত বন্ধে রুশ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেয় তুরস্ক। তবে বিষয়টি যুদ্ধরত দেশ দুটির সম্মতির ওপর নির্ভর করছে বলে পরোক্ষভাবে এড়িয়ে যায় রাশিয়া। অভিযোগ রয়েছে, আর্মেনিয়ার পক্ষে রাশিয়া এবং আজারবাইজানের পক্ষে তুরস্ক অবস্থান নিয়েছে।

এরপর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্থানীয় সময় গত সোমবার সকালে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে তৃতীয় দফা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এর কয়েক মিনিটের মাথায় উভয় পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 5 =

Back to top button