রাজনীতি

করোনা মোকাবিলায় সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ: ফখরুল

করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় দেশের সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘সরকার অন্যান্য রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ বা যারা এক্সপার্ট আছেন তাদের কারও সঙ্গে পরামর্শ করে এই কাজ করছেন না। সরকার একেক সময়ে একেক তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এই দুঃসময়ে কোনও সমালোচনা করতে চাই না। শুধু যে ত্রুটিগুলো আছে সেগুলো দেখিয়ে দিচ্ছি। সবাইকে একত্রিত করে ঐক্যবদ্ধভাবে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে।’

সোমবার (৪ মে) রাজধানীতে দুস্থ ও কর্মহীন মানুষের মধ্যে রমজান উপলক্ষে উপহার সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। উত্তরার দক্ষিণখানে বিমানবন্দর থানা বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার মানুষের মধ্যে আশা সৃষ্টি করার ক্ষেত্রেও ব্যর্থ হয়েছে। কিছু দিন আগে সিদ্ধান্ত নিলো গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। বন্ধ করলো। কিন্তু দুইদিন পরে গণপরিবহন খোলা রাখলো। ফলে দেশের মধ্যে সারা জায়গায় ছড়িয়ে পড়লো। এই বিষয়গুলো আজ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার আজ গার্মেন্ট কারখানা খুলেছে, কিন্তু কর্মীদের সেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। এখন আবার অনেক গার্মেন্টকর্মী আক্রান্ত হওয়া শুরু হয়েছে। অর্থাৎ সরকার ব্যর্থ হয়েছে গার্মেন্ট মালিকদের দিয়ে তাদের শ্রমিকদের পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তা গ্রহণ করাতে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ সারা বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম ও লড়াই করছে এই অসুখ থেকে বাঁচার জন্য। কী দুর্ভাগ্য আমাদের। সরকার থেকে মানুষ আশা করে  দুর্যোগ দুঃসময়ের দিনে তারা সঠিক পথ দেখাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার সঠিক পথ দেখাতে পারেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সরকার যেহেতু জনগণ দ্বারা নির্বাচিত নয়, তাই তাদের কোনও জবাবদিহি নেই। সে কারণে প্রথম দিকে মার্চ পর্যন্ত তারা এটাকে অবহেলা করেছে এবং অবহেলা এমন পর্যায়ে করেছে যে এটাকে তারা গুরুত্বই দেয়নি। দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যখন লকডাউন ঘোষণা করেছে তখন এরা কিন্তু লকডাউন ঘোষণা করেনি, স্থানীয়ভাবে লকডাউন দিচ্ছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয়ভাবে কোনও লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি। যার ফলে মানুষ এটার গুরুত্ব সেভাবে উপলব্ধি করতে পারেনি।’

হাসপাতালের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যা আছে তা একেবারেই অপ্রতুল। ডাক্তার আক্রান্ত হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি, সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন, পুলিশ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন, যারা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। সরকার এ বিষয়ে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি এখন পর্যন্ত। বরং যেসব সিদ্ধান্ত তারা নিচ্ছে প্রতিটিতে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। ফলে গোটা দেশে আরও বেশি রকমের দুর্যোগের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’

বিএনপি অত্যন্ত দুঃসময় অতিক্রম করছে

বিএনপি অত্যন্ত দুঃসময় অতিক্রম করছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই দুঃসময়েও সাধ্যমতো আমাদের যতটুকু সম্পদ আছে তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি। প্রথমদিকে মানুষকে সচেতনতামূলক লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করেছি। এরপর উপহার নিয়ে এই রোজার মাসে আমরা চেষ্টা করছি পুরো দেশেই যতটুকু সম্ভব মানুষের কাছে দাঁড়ানোর জন্য।’

গুলশানে নিজের বাসায় কোয়ারেন্টিনে থাকা খালেদা জিয়ার জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উল্লেখ করে মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দেশনেত্রী অসুস্থ, তিনি বাসাতেই আছেন। তিনি বেরুতে পারছেন না। কারণ, তাকেও কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তিনিও আপনাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং সবাই যাতে এই দুর্যোগ থেকে রক্ষা পায় সেজন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন।’

গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত ও তাদের চাকরির নিশ্চয়তা বিধান, হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী ও শিল্পকারখানার শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত না করা দাবিও জানান ফখরুল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর যুবদলের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, বিমানবন্দর থানা বিএনপির জুলহাস মোল্লা, মুনির ভুঁইয়া, পূর্ব বিমানবন্দর থানার এস আই টুটুল, স্থানীয় কমিশনার আলী আকবর, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six + 12 =

Back to top button