করোনাকালে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আম; জনসচেতনতা বাড়ছে
চলমান করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবনযাপনের ধরন। আমরা এখন বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই থাকছি। এরই মধ্যে এসেছে মধুমাস, অর্থাৎ মধুময় ফলের মৌসুম। ফলের বাজারে কাঁঠাল, লিচুর সাথে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন স্বাদের বাহারি আম।
আমের জাত, স্বাদ বা সাইজ যা-ই হোক, এটি হলো সেই ফল যার জন্য অধিকাংশ মানুষ সারাবছর অপেক্ষা করে থাকে। ঝড়ের দিনে পাকা আম কুড়ানো আমাদের অনেকেরই শৈশবের স্মৃতি। সুগন্ধে ভরা এই সুস্বাদু ফলটি প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর।
করোনাকালে কেন আম খাবেন?
স্বাদ আর সুগন্ধ ছাড়াও আম একটি রসালো ফল যা ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ৬, ফোলেট, আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়ামসহ পুষ্টিতে ভরা। এটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ফাইবারে পরিপূর্ণ। যদিও সুস্বাদু এই ফলটি খাওয়ার জন্য অন্য কোনো কারণের প্রয়োজন পড়ে না তবু জেনে রাখা ভালো, এটি আপনাকে ভাইরাসজনিত রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আম
এক কাপ কাটা আমে (১০০ গ্রাম) প্রায় ৩৬.৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে, যা প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি এর ৬৭ শতাংশ। ভিটামিন সি আমাদের দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
ওজন কমায়
ওজন কমাতে সাহায্য করে এমন খাবার খুঁজছেন? তাহলে আম খান। যেহেতু এই পাল্পি ফলের মাংস তন্তুতে ভরপুর তাই এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরিয়ে রাখবে। খাওয়ার আগে আম খেয়ে নিন। তাহলে এটি অতিরিক্ত খাওয়া প্রতিরোধ করবে। তাই বলে প্রচুর আম একসঙ্গে খেয়ে ফেলবেন না যেন!
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ
আম খাওয়ার সুফল এখানে শেষ নয়। আপনি কি জানেন যে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আমের একটি সঠিক ফল হতে পারে? হ্যাঁ, যেহেতু এটি ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট দিয়ে বোঝাই তাই এটি আপনার রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে।
চোখের জন্য উপকারী
প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ এর ১০ শতাংশ পেতে পারেন আম থেকে। এটি ভালো রাখে আমাদের চোখের স্বাস্থ্যও। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট চোখকে অতিবেগুনি আলোকরশ্নি থেকে রক্ষা করতে পারে। এই অতিবেগুনি আলোকরশ্নি দৃষ্টিশক্তির সর্বনাশ ডেকে আনার জন্য পরিচিত।
হজমের জন্য দুর্দান্ত
হজমশক্তি ভালো করার জন্য কলা খেয়ে ক্লান্ত? তবে এবার আম খান। পাকা এই ফলটি ফাইবার এবং এ্যামাইলেস সমৃদ্ধ যা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি খাবারের আরও ভালো শোষণ এবং সহজ হজম নিশ্চিত করে।
চিনির বিকল্প
আম দিয়ে তৈরি করা যায় সুস্বাদু অনেকরকম খাবার। আম দিয়ে তৈরি নানারকম শেইক, স্মুদি এই গরমে আপনার তৃষ্ণা মেটাতে যথেষ্ট। এই মিষ্টি ফলটি জাঙ্ক ফুডের দুর্দান্ত বিকল্প। চিনি দিয়ে তৈরি করা খাবারের বদলে আম খান। অগ্নিবাণী সূত্রে জানা যায়, এটি যেহেতু অন্য ফলের তুলনায় বেশ মিষ্টি, চিকিৎসকেরা প্রতিদিন আম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে আপনার ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে আম খাবার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এবছর দেশে আমের রাজধানীখ্যাত রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে আম সরবরাহ করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এমনই একজন প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোক্তা www.buyandpick.com এর অন্যতম কর্ণধার মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, “আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক সচেতন। তাই কেমিক্যালমুক্ত আমের ব্যাপারে যেমন আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি, তেমনি আমের পুষ্টি ও ঔষধিগুন নিয়েও ক্রেতাসাধারণকে বেশ সচেতন দেখছি। সার্বিকভাবে আমরা বেশ আশাবাদী, আলহামদুলিল্লাহ।”