করোনাভাইরাসঃ বাংলাদেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত ২৪২৩, মৃত্যু ৩৫
বাংলাদেশে বেড়েই চলছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৫ জন মারা গেছেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪২৩ জন।
এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৭৮১ জন। আর মোট শনাক্তের সংখ্যা ৫৭ হাজার ৫৬৩ জন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান। দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত এ ব্রিফিং অনলাইনে হয়।
নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৭১ জন কোভিড-১৯ রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ১৬১ জন।
মৃত্যু বিশ্লেষণে পুরুষ ২৯ জন এবং নারী ৬ জন। বিভাগ অনুযায়ী মৃতদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে- ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রামে ৯ জন, সিলেটে ২ জন, বরিশালে ১ জন, রাজশাহীতে ১ জন, খুলনায় ১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২২ জন, বাড়িতে মারা গেছেন ১২ জন এবং ১ জন মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন।
মৃত ৩৫ জনের বয়স:
- ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী:৩ জন।
- ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী: ১ জন
- ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী: ৩ জন।
- ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী: ১৪ জন।
- ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী: ১১ জন।
- ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়স: ১ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৩ হাজার ৭৮৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৪টি নমুনা। দেশের ৫০টি পরীক্ষাগারে এই নমুনাগুলো পরীক্ষা করা হয়। মোত ৫২টি ল্যাবে এই নমুনাগুলো পরীক্ষা করা হয়।
এপর্যন্ত শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
এক নজরে বাংলাদেশের করোনাচিত্র:
- মোট আক্রান্ত: ৫৭ হাজার ৫৬৩ জন।
- মারা গেছেন: ৭৮১ জন।
- মোট সুস্থ: ১২ হাজার ১৬১ জন।
- মোট নমুনা পরীক্ষা: ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ২৭৭টি।
ব্রিফিং এ অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মাস্ক পরা অত্যাবশ্যক। সাধারণ কাপড়ের একটি মাস্ক দিয়েই জীবাণুযুক্ত হাঁচি-কাশি ও ড্রপলেট প্রতিরোধ করতে পারি। বাড়িতে তৈরি কাপড়ের মাস্ক পুনর্ব্যবহারযোগ্য, কোনপ্রকার আকারের পরিবর্তন ছাড়াই এই মাস্কটি বারবার ভালো করে ধুয়ে ব্যবহার করা যায়।
যারা নিজেরা মাস্ক পরতে বা খুলতে পারেন না যেমন প্রতিবন্ধী বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী যারা, তারা ছাড়া সবাইকে মাস্ক পড়ার নির্দেশ দেন তিনি।
এছাড়াও বাড়িতে অবস্থান করছেন এমন ব্যক্তিরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে বাইরে থেকে যেসব সদস্য বাড়িতে ফিরবেন তারা যেন ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে এবং মাস্ক পরে বয়স্ক সদস্যের সঙ্গে
এছাড়াও তিনি জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ‘সিডিসি-কেয়ার ফর অল’ সেবা চালু করেছে। এই সেবার অধীনে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত (কোভিড-১৯) প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
তবে শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে। সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৬ লাখ মানুষের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া এতে মারা গেছেন ৩ লাখ ৮৮ হাজারেরও বেশি মানুষ।
আশার কথা হচ্ছে, ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৩১ লাখ ৮১ হাজার ১৮০ জন মানুষ সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন। প্রতিবেশী ভারতে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে ছয় সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
তবে তুলানামূলকভাবে বর্তমানে ভালো অবস্থানে রয়েছে চীন। ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহানে সম্প্রতি এক কোটির বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে মাত্র ৩০০ জনের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তাই উহানকে এখন অনেকটাই করোনামুক্ত বলছেন সেখানকার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।