সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূ গণধর্ষনের ঘটনায় এবার জোরেশোরেই মুখ খুলেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান জয়। তিনি বলেছেন, “অপরাধীদের আমরা কখনই প্রশয় দেই না। অপরাধী সে যেই হোক, তাকে শাস্তি পেতেই হবে।”
বেশ জোর দিয়েই তিনি দাবি করেছেন, অভিযুক্তরা কেউই ছাত্রলীগের নেতা না। তাঁর স্পষ্ট ভাষ্য, “সিলেটের এমসি কলেজে কোনো কমিটি নেই। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কিন্তু ছাত্রলীগের কোনো নেতা না।”
অবশ্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এও বলছেন, অপরাধে জড়িত থাকলে সংগঠনের কেউই ছাড় পাবে না।
সম্প্রতি স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে এসে বন্ধ কলেজের ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। গেলো শুক্রবার ওই বর্বরোচিত ঘটনার পর থেকে ক্ষোভ, নিন্দা আর ধিক্কারে সরব হয়ে উঠেছে বিভিন্ন সংগঠন। অবিলম্বে ধর্ষকদের গ্রেপ্তারের দাবি সবার। বন্ধ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কর্মীদের থাকতে দেওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ছাত্রলীগ এমসি কলেজে বরাবরই লাগামহীন। এর আগে চাঁদাবাজি, নির্যাতনসহ নানা অপরাধে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে মনে করেন তারা।
ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে ২০১২ সালের আগস্টে, পুড়িয়ে দেয়া হয় সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাস। তখন ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময়, দুঃখ ও আক্ষেপ উঠে আসে খোদ তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর চোখেমুখে। দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে বাতিল হয় ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি। ওই মামলায় আসামি করা হয় ২৯ জনকে। এরপর নতুন ভবনে পথচলা শুরু হয় ছাত্রাবাসটির। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি বিচার।এরপরও নানা সময় উত্তপ্ত থেকেছে সিলেটের প্রাচীন এই কলেজ ক্যাম্পাস।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না থাকলেও ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ করছে ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ। পদ-পদবী ছাড়াও একেক জন ক্যাডারে পরিণত হয়ে চাঁদাবাজি, খুন, গুম করে সব সময় আলোচনায়। অপরাধের সবশেষ তালিকায় যুক্ত হয়েছে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণ।
সমালোচনার মুখে থাকা সিলেট ছাত্রলীগের কোনো প্রতিক্রিয়া এ বিষয়ে পাওয়া যায়নি। তবে অপরাধীদের নামধারী কর্মী বলে দায় এড়াতে চাইছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদিও বছরের পর বছর পার হলেও কমিটি গঠনের ব্যর্থতা ঘাড়ে নিয়েছেন তারা।